রামকৃষ্ণ বর্মন, জামালদহ: ওঁরা মাটির কাজ করেন। কাজ শেষে প্রায়দিনই খালি পেটেই বাড়ি ফেরা ওঁদের রোজনামচা। তবে মঙ্গলবার যেন ওঁদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছিল। কাউকে খালি পেটে বাড়ি ফিরতে হয়নি। দিনভর কাজ শেষে পাত পেড়ে ভুড়িভোজ সেরে তবেই বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছিলেন। ওঁরা আর কেউ না, ওঁদের পরিচয় জবকার্ডধারী ১০০দিনের শ্রমিক।
কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের খারিজা জামালদহ এলাকায় চলছে ১০০দিনের প্রকল্পের আওতায় সেচ নালা খননের কাজ। কাজ শুরু হয়েছে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে। চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সেচ নালা খননের কাজে জুড়েছেন স্থানীয় প্রদীপ দাস, মায়া দাস, গীতা দাস, মেনকা বর্মন, বুধবালা বর্মনের মতো প্রায় ৭০ জন শ্রমিক। প্রায় সকলের ঘরেই নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর জোগাড়। তাই একপ্রকার দাঁতে দাঁত চেপে কাজ করে চলেন খালি পেটে। বাড়ি ফেরাটাও সেই খালি পেটেই। তবে, এদিন কাজ শেষে সকলেই পাত পেড়ে খেলেন। খাবারের তালিকায় ছিল ভাত, ডাল, কাতল মাছ, মুড়ি ঘণ্ট, ফুলকপির সবজি, পনির ও পকোড়া। শেষ পাতে ছিল পেল্লায় সাইজের রসগোল্লাও। হাড় ভাঙ্গা খাটুনি শেষে পাত পেড়ে খাবার সুযোগ পেয়ে আপ্লুত সকলেই।
এদিন ওই সকল শ্রমিকদের মুখে হাঁসি ফোঁটানোর নেপথ্যে রয়েছেন জামালদহের অসীম কুমার বর্মন। তিনি রাজগঞ্জ ব্লকের চাওয়াইডাঙ্গি জুনিয়র হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত। গতকাল অর্থাৎ সোমবার তাঁর ছেলে কৌস্তভ বর্মনের অন্নপ্রাশনের অনুষ্ঠান ছিল। আয়োজন ছিল এলাহি। অনুষ্ঠান প্রচুর খাবার উদবৃত্ত হয়। খাবার নষ্টের ভয়ে এদিন তা শ্রমিকদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। অসীমকুমার বর্মন বলেন, ‘একসঙ্গে এত মানুষকে খাওয়াতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’