কলকাতা : জল্পনা ডালপালা মেলছিল দিনকয়েক ধরেই। বৃহস্পতিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সেই গুজবকে আরও প্রতিষ্ঠা দিল।
নতুন মরশুমে কি তবে বাংলাদেশের বাণির্জিক সংস্থা বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল? সম্ভাবনা প্রবল। এদিন এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সংবর্ধনা জানালো বসুন্ধরা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর তথা বাংলাদেশের ফুটবল ক্লাব শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে।
দুই বাংলার ফুটবল সংস্কৃতির একসঙ্গে চলার প্রয়াস। সেই উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে এদিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সোবহানের হাতে ক্লাবের সাম্মানিক আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের তরফে। উপস্থিত ছিলেন সোবহানের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশনের সহ সভাপতি মহম্মদ ইমরুল হাসান। ছিলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সিনিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা আইএফএ চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত, ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার সহ লাল-হলুদের অন্যকর্তারা। সাক্ষী থাকলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, সমরেশ চৌধুরি, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, মেহতাব হোসেন সহ একঝাঁক প্রাক্তন ফুটবলারও।
ভারত-বংলাদেশ ফুটবল সংস্কৃতির মেলবন্ধনের কথা এদিনের অনুষ্ঠানে বারবার উঠে এলেও তা ছাপিয়ে জোরালো হল ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে সোবহানের সংস্থা বসুন্ধরা গ্রুপের গাঁটছড়া বাঁধার জল্পনা। গত দুই বছরের ব্যর্থতা ভুলে নতুনভাবে পথ চলার খোঁজে লাল-হলুদ শিবির। বর্তমান বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সম্পর্ক তলানিতে। মরশুম শেষ হলেই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সম্পর্কছিন্ন করতে পারেন তারা। তা অনুমান করেই নতুন বিনিয়োগকারীর খোঁজে নেমে পড়েছেন লাল-হলুদ কর্তারা।
ময়দানে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, আইএসএলে খেলার জন্য ইস্টবেঙ্গলের হাত ধরতে পারে বসুন্ধরা গ্রুপ। তার আভাস পাওয়া গেল এদিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও। আপ্লুত সোবহান নিজেই জানিয়েছেন, আগামী সময়ে ইস্টবেঙ্গলকে সবরকম সহযোগিতায় তাঁরা প্রস্তুত। এমনকি লাল-হলুদ টিমকে বাংলাদেশে বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলার আমন্ত্রণও জানিয়ে রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি বলেছেন, আমরা চাই দুই বাংলার ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ ভবিষ্যতে আরও কাছাকাছি আসুক।
মেলবন্ধনের কথা শোনা গিয়েছে ক্লাবের সহ সচিব রূপক সাহার গলাতেও। তিনি বলেছেন, সায়েম সোবহানের হাত ধরে বাংলাদেশে বসুন্ধরা গ্রুপ ফুটবলে অভূতপূর্ব কাজ করেছে। আসুন না, এই বাংলাতে আমরা একসঙ্গে সেই প্রয়াসকে এগিয়ে নিয়ে যাই। ক্লাবের অন্দমহলের খবর অনুযায়ী, বিনিয়োগের ব্যাপারে বসুন্ধরা কর্তার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরে ফেলেছেন লাল-হলুদ কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার সন্ধেতেও বাইপাসের ধারে একটি পাঁচতারা হোটেলে এই ব্যাপারে সোবহানের সঙ্গে আরেকপ্রস্ত আলোচনায় সারেন কর্তারা।
কিন্তু কীভাবে এই বিনিযোগ সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকছে। নিয়ম অনুযায়ী বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশের বসুন্ধরা গ্রুপের কাছে সেই অনুমতি থাকলে ভারতে বিনিয়োগে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তা না থাকলে এত দ্রুত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের একটি বাণির্জিক সংস্থার পক্ষে কীভাবে পড়শি দেশের কোনও ক্লাবে বিনিযোগ করা সম্ভব, সেবিষয়ে প্রশ্ন উড়িয়ে দেওয়ার নয়।