নাগরাকাটা: পাহাড়ের উৎপাদিত ফল-ফুল যাতে বিদেশের বাজারে রপ্তানি করা যায় সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে রাজ্য। বৃহস্পতিবার কালিম্পংয়ের (Kalimpong) সিন্দেবংয়ে একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ উদ্যানপালন মন্ত্রী সুব্রত সাহা। মন্ত্রী বলেন, ‘দার্জিলিং-কালিম্পং হল উদ্যান পালনের স্বর্গভূমি। এখানে অনেক কিছু করার রয়েছে। এখানকার ফল-ফুল সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত কিছুকেই সামনের সারিতে নিয়ে আসার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই এবিষয়ে উদ্যোগী। জিটিএ’র চেয়ারম্যান অনীত থাপাকে বলা হয়েছে আরও নানা ধরনের প্রকল্প তৈরি করে দপ্তরের কাছে জমা দিতে। জিটিএ’র সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে কাজ হবে। এজন্য অনীত থাপাকে কলকাতায় আসার আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে।’
এদিন কালিম্পং এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত সিন্দেবং এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী মোট ২৬১ জনের হাতে চাষের জন্য পলি হাউসের কিট তুলে দেন। সিন্দেবং ছাড়াও পুদুং ও ডুংরা এলাকার চাষিরা ওই কিট পেয়ছেন। পলি হাউসের মাধ্যমে সেখানে চেরি টমাটো, ব্রোকোলি, লাল বাঁধাকপি, রঙিন ক্যাপসিকাম, রঙিন ফুলকপির মতো অসময়ের অথচ দামি ফসলের চাষবাসের নয়া প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চারা যোগানের জন্য সিন্দেবংয়ে একটি কেন্দ্রীয় ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকেই পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে অসময়ের ফসলের চারার সরবরাহ করা হবে। মাটির সংস্পর্শ ছাড়াই প্লাগ ট্রে’তে ওই চারা তৈরি হবে। এতে জীবাণুমুক্ত গাছ মিলবে। মন্ত্রীর হাত দিয়ে এদিন ওই ইউনিটেরও উদ্বোধন হয়। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন উদ্যানপালন দপ্তরের নির্দেশক জয়ন্ত কুমার আইকত।
কালিম্পং জেলা উদ্যানপালন দপ্তর জানিয়েছে, প্রথম দফায় গরুবাথান ব্লকের তোদে-তাংদা এলাকায় ২৩৬ জনকে পলি হাউস দেওয়া হয়েছিল। সেখানে এখন বাহারি লিলিয়াম ফুলের চাষ হচ্ছে। ওই ফুল বিদেশের বাজারে রপ্তানি করাই দপ্তরের লক্ষ্য। দ্বিতীয় দফায় জেলার পুদুং, ডুংরা, সিন্দেবংয়ের মতো গ্রামগুলি ছাড়াও কাগে গ্রাম পঞ্চায়েত ও তোদে-তাংদা মিলিয়ে আরও ৫০০ জনকে পলি হাউস দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এরই অঙ্গ হিসেবে এদিন ২৬১ জনকে ওই সামগ্রী দেওয়া হয়। দ্রুত কাগে এলাকার ১২১ জনকে ও তোদে-তাংদার ১১৮ জনকে পলি হাউসের কিট তুলে দেওয়া হবে।
ফসল বৈচিত্র্যে কালিম্পং জেলাকে নতুন করে আবিষ্কার করার কথা এদিন উঠে আসে উদ্যান পালনের দপ্তরের পক্ষ থেকে। বেশ কিছুদিন ধরেই ওই জেলার উদ্যান পালন আধিকারিক সঞ্জয় দত্ত-র উদ্যোগে এব্যাপারে নানা কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। লিলিয়াম রপ্তানির পরিকল্পনা গ্রহণের আগে অত্যন্ত ঝাল লংকা হিসেবে পরিচিত কালিম্পংয়ের ডাল্লে খুরসানিকে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে রপ্তানির দিশা দেখানোও সম্ভব হয়েছে। এদিন সিন্দেবংয়ের অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন জিটিএ চিফ অনীত থাপাও। সংশ্লিষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, শুক্রবার মন্ত্রীর তোদে-তাংদাতে লিলিয়ামের চাষ দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে।