শিলিগুড়ি: শিলাবৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস কপালে চিন্তার ভাজ ফেলেছিল। কিন্তু হালকা বৃষ্টি হলেও শিলাবৃষ্টির দেখা মেলেনি। তাতেও দুশ্চিন্তার মেঘ কাটছে না মাটিগাড়ার পতিরামজোত এলাকার স্ট্রবেরি চাষিদের। কারণ করোনার কারণে সিকিম স্ট্রবেরি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চাষিদের স্থানীয় বাজারের ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে। কিন্তু এত স্ট্রবেরি কী শিলিগুড়িতে বিক্রি হবে? সেটাই সবচাইতে বড় প্রশ্ন।
চাষিদের বক্তব্য, শিলাবৃষ্টি হলে ফসলের মারাত্মকভাবে ক্ষতি হত। বৃহস্পতিবার পতিরামজোতের মাতছায়ার পাশের একটি খেতে স্ট্রবেরি চাষের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁরা সেখানে চাষিদের সঙ্গে কথা বলেন। কী করে লাল ফল বাজারজাত করা যেতে পারে সেবিষযে পরামর্শ দেন। চলতি মরশুমে সুইট চার্লি, উইন্টারডন, ফেস্টিভ্যাল, নেভিলার মতো বিভিন্ন প্রজাতির স্ট্রবেরি ফলেছে। যার মধ্যে সুইট চার্লির ভালো চাহিদা রয়েছে। মাটিগাড়া ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা পিনাজ বেদ জানান, অ্যান্টি অক্সিডেন্টে ভরপুর স্ট্রবেরি শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সেজন্য বাজারে এর চাহিদা রয়েছে। নতুন প্রজন্ম যদি অন্য কোনও ফসল চাষ করতে না চায়, তবে তারা স্ট্রবেরি চাষ করতে পারে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় তাঁরা স্ট্রবেরি চাষে সহযোগিতা করছেন। এই অঞ্চলের অর্থনীতির বিকাশে তা সহায়ক হবে।
এমনিতে পতিরামজোতকে এগ্রি টুরিজমের জায়গা হিসাবে তুলে ধরতে স্ট্রবেরি গ্রাম রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বর্তমানে চারটি জায়গায় স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। ফলনও ভালো হচ্ছে। কিন্তু সিকিমের পথ খোলার দিকে চেয়ে বসে রয়েছেন চাষিরা। নিজের দুই বিঘা জমির ওপর স্ট্রবেরি চাষ করছেন হরিন্দ্র সরকার। হরিন্দ্রবাবু জানান, ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনার জন্য বাজার ধরতে সমস্যা হচ্ছে। তাঁরা চাইছেন, সাধারণ মানুষ সরাসরি খেত থেকে স্ট্রবেরি কিনে নিয়ে যাক।
চলতি মরশুমে চাষিদের কাছে স্ট্রবেরি কিনতে চেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২০ কেজির কাছাকাছি স্ট্রবেরি খেত থেকে বের হচ্ছে। সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে স্ট্রবেরি চাষ করা হচ্ছে। পাইকারি বাজারে এবছর ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি দরে চাষিরা স্ট্রবেরি বিক্রি করছেন। খোলাবাজারে সেই স্ট্রবেরির দাম ৫০০-৬০০ টাকা কেজি।