রাঙ্গালিবাজনা: বাবা মারা গিয়েছেন দু’বছর আগে। এরপর ভাইয়ের মাথায় ‘ছাতা’ ধরেছেন দাদা। দাদা নিজেই কলেজ পড়ুয়া। ভাই স্কুলপড়ুয়া। দাদা মাধ্যমিক পরীক্ষায় পেয়েছিলেন ৮৫ শতাংশের বেশি নম্বর। এখন নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি পরিবারের ভাই-বোনদের পড়াশোনা করানোর জন্য টিউশনিই তাঁর মূল পেশা। আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটার উত্তর দেওগাঁওয়ের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া প্রসেনজিৎ দেবনাথের লড়াইয়ে ধন্য ধন্য করছেন পড়শিরা।
প্রসেনজিতের ভাই শিমূলচন্দ্র দেবনাথ এবার দেওগাঁও হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় দিয়ে ৮৭.৭১ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। বাংলায় ৯০, ইংরেজিতে ৭৫, অংকে ৯৩, ভৌত বিজ্ঞানে ৯১, জীবন বিজ্ঞানে ৮৬, ইতিহাসে ৮৪, ভূগোলে ৯৫ নম্বর পেয়েছে শিমূল। তার খুব ইচ্ছে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার। কিন্তু বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার খরচ জোগানো পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। দাদা প্রসেনজিৎ দেবনাথ সামান্য রোজগারে পড়াশোনা এবং পরিবারের ভাত জোটানোর জন্য লড়াই করছেন। তাঁর বোন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ইংরেজি অনার্সের পড়ুয়া তিনি। প্রসেনজিৎ জানান, ভাইকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করানোর ইচ্ছে তাঁর। কিন্তু কীভাবে পড়াশোনার খরচ জোটাবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
প্রসেনজিৎ ও শিমূলের মা কণিকা রানী দেবনাথ বলেন, ‘এখন তো ভগবানই ভরসা। ছেলেগুলোর ভবিষ্যৎ কী বুঝতে পারছি না।’ প্রতিবেশী রানিবালা দাস বলেন, ‘প্রসেনজিৎ নিজেও পড়ছে ভাইবোনদেরও পড়াচ্ছে। এরকম দৃষ্টান্ত কমই দেখা যায়। ছেলে দু’টি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হলে আমরা খুব খুশি হব।’
আরও পড়ুন : দ্বিতীয় দিনেও পর্যাপ্ত যাত্রী পেল না মিতালি এক্সপ্রেস