মেখলিগঞ্জ: আদালতের রায়ে চাকরি খুইয়েছেন পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। আর এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে অঙ্কিতার স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবক সকলেই। মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন অঙ্কিতা অধিকারী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মেধা তালিকায় নাম না উঠলেও বাবার প্রভাব খাটিয়ে চাকরি পেয়েছেন স্কুলে। সেই মামলায় হাইকোর্ট শুক্রবার তাঁকে বরখাস্ত করেছে। এমনকী এতদিন যা বেতন পেয়েছেন সেই বেতন দুই কিস্তিতে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর এই রায়ের ফলে প্রভাব পড়েছে স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের মধ্যেও। শিক্ষিকা হিসাবে ভালো হলেও হাইকোর্টের রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা। স্কুলের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী সাজেনা খাতুনের কথায়, ‘টাকার বিনিময়ে যদি এভাবে মন্ত্রীর ছেলে মেয়েরা চাকরি পায় তাহলে তো আমরা বড়ো হয়ে চাকরি থেকে বঞ্চিত হব। তাই আদালতের রায় যথাযথ বলে আমি মনে করি।’ একই দাবি করেছে ওই বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণীর আর এক ছাত্রী রেজিনা খাতুনও। সেও জানায়, ‘আদালত যে রায় দিয়েছে ভালোই দিয়েছে। আমরাও তো চাকরির পরীক্ষা দেব। রাজনৈতিক প্রভাবে যদি চাকরি হয়। তাহলে আমরা তো বঞ্চিত থেকে যাবো।’
অঙ্কিতা অধিকারীকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা নিয়ে অভিভাবকরাও খুশি। তবে শাসক দলের মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ অনেকে। ঝুমুর আলি, মিনু রায়, মানিক রায়, সবিতা রায়ের মত অভিভাবকরা অবশ্য ভয়ডরহীন ভাবেই হাইকোর্টের রায়কে সমর্থন করেছেন। ঝুমুর আলি বলেন, ‘আমার ভাস্তি ওই স্কুলে পড়ে। যে দুর্নীতি করে স্কুলে চাকরি পেয়েছে সে স্কুলে কোন আদর্শের কথা ছাত্রীদের পড়াবেন।’ একই দাবি সবিতা রায়েরও৷ তিনি বলেন, ‘খবরের দৌলতে অঙ্কিতা অধিকারীর কথা বাচ্চাদের কানেও গেছে। তারা তাঁকে কি করে মেনে নেবেন ম্যাডাম হিসাবে।’
তবে শিক্ষিকা হিসেবে অঙ্কিতার প্রশংসাও করেছেন অনেকে। এক অভিভাবক মারুফা খাতুন দাবি করেছেন অঙ্কিতা অধিকারী শিক্ষিকা হিসাবে ভালো ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের কাছে শুনেছি ভালো পড়াতেন অঙ্কিতা অধিকারী। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কিছু বলবো না।’ অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ের পরও স্কুলে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি৷ নির্দেশিকা এলে সেই মতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে দাবি স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষিকার। পরিচালক সমিতির সভাপতি অমিতাভ বর্ধন চৌধুরী বলেন, ‘এখনও আমাদের কাছে কোনও নির্দেশিকা আসেনি। তাই এই বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’ প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া জানান। স্কুল বন্ধ থাকায় তিনি জলপাইগুড়ির বাড়িতে রয়েছেন, টিভিতে হাইকোর্টের রায় শুনেছেন তিনি। কিন্তু শিক্ষা দপ্তরের কোন রকম নির্দেশিকা আসেনি বলে তিনিও জানিয়েছেন। তবে শিক্ষিকা হিসাবে অঙ্কিতা দক্ষ ছিলেন দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: আদালতের রায়ে খুশি ববিতার পরিবার, দোষীদের শাস্তি চান তাঁরা