শুভঙ্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি : বিশ্বের পতঙ্গ জগতে যুক্ত হল মাছির আরও একটি প্রজাতি। তার সঙ্গে নাম জুড়ল দার্জিলিংয়ের। বিজনবাড়ি থেকে নতুন প্রজাতির সেই মাছি খুঁজে বের করেছেন তিন বাঙালি প্রাণী বিজ্ঞানী। আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছে তাঁদের আবিষ্কার। ১ নভেম্বর প্রাণীবিদ্যা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক জার্নাল জুটেক্সাতে প্রকাশিত হয়েছে সেই গবেষণার কথা। মাছির নতুন প্রজাতির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মায়োস্পিলা হিমালয়ানসিস জানা, হাজারি অ্যান্ড সিনহা।’
হুগলির শ্রী গোপাল ব্যানার্জি কলেজের প্রাণীবিদ্যার অধ্যাপক শুভ্রকান্তি সিনহা এবং তাঁর দুই ছাত্র নন্দন জানা এবং প্রভাস হাজারি যৌথভাবে গবেষণার কাজ করেছেন। হলোটাইপের জন্য বুধবার জুলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ায় নমুনা জমা দেবেন গবেষকরা।
মাছি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই কাজ করছেন শুভ্রকান্তি। সেই সূত্রেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন তাঁরা। চলতি বছর ২০ এপ্রিল বিজনবাড়ি থেকে ভিন্ন ধরনের মাছিটি নজরে আসে তাঁদের। তারপর দীর্ঘ ছয় মাস গবেষণাগারে পরীক্ষানিরীক্ষার পর তাঁরা নিশ্চিত হন, মাছিটি একেবারেই নতুন প্রজাতির। শুভ্রকান্তি জানিয়েছেন, ‘মাছিটি মাসকিডি গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। তবে এখনও পর্যন্ত সেটির পূর্ণাঙ্গ জীবনশৈলী সম্পর্কে সার্বিক তথ্য জানা যায়নি। তার জন্য আরও গবেষণা দরকার।’ তবে মাছিটির বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়েছেন শুভ্রকান্তি। তাঁদের গবেষণা অনুসারে, ওই নির্দিষ্ট প্রজাতির মাছি জঙ্গলেই থাকে। বনাঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নতুন প্রজাতির মাছির লার্ভা জঙ্গলের পচা জৈববস্তু মাটিতে মিশিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
শুভ্রকান্তির কথায়, ‘উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে নতুন প্রজাতির এরকম নানা পতঙ্গ রয়েছে। আরও কিছু পতঙ্গ নিয়ে আমরা কাজ করছি। নতুন প্রজাতির মাছি আবিষ্কার প্রতিদিনের জনজীবনে হয়তো সরাসরি কোনও প্রভাব ফেলবে না। তবে প্রাণীবিদ্যার ছাত্রছাত্রী, গবেষকদের নতুন দিশা দেখাবে।’ তাঁর আশা, নতুন প্রজাতি সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা হলে এমন কোনও তথ্য সামনে আসতে পারে যেগুলি মানবসমাজের উন্নয়নে সরাসরি কাজে লাগবে।