বর্ধমান: এ যেন অনেকটা ভুতুড়ে কাণ্ড! কৃষি দপ্তরে চাকরির জন্য আবেদন করার সাত বছর পর এল পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড। ডাকযোগে অ্যাডমিট কার্ড পাওয়ার পর চোখ কপালে উঠল আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির। বর্ধমানের নারকেল ডাঙা এলাকার বাসিন্দা তিনি। তবে রাজ্যের কৃষি দপ্তর না ডাক বিভাগ, কাদের ব্যর্থতায় এমন ঘটনা ঘটল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না আশিসবাবু। যদিও এই ঘটনার পিছনে দুর্নীতিকেই দুষছেন বিরোধীরা।
জানা গিয়েছে, আশিসবাবু ২০১৬ সালে কৃষি দপ্তরে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য কৃষি দপ্তরে কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক পদে ৮১৮ জনকে নিয়োগ করা হবে বলে উল্লেখ ছিল। ওই পদে আবেদনের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি রাখা হয়েছিল ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। তা দেখে আশিসবাবু ওই পদে আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার আশিসবাবু জানান, তিনি ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করার পর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় সাত বছর। কিন্ত এতদিনেও ওই চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড বা আনুসাঙ্গিক কিছু তাঁর কাছে আসেনি। হঠাৎ বুধবার ডাকযোগে কৃষি দপ্তরের সেই পরীক্ষার একটি অ্যাডমিট কার্ড হাতে পান তিনি। অ্যাডমিট কার্ড ভালো করে পড়তেই হতবাক হয়ে পড়েন তিনি। কারণ, চাকরির পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে প্রায় সাত বছর আগে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথাও ভাবছেন বলে জানান।
এদিকে এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্ক চরমে উঠেছে। ঘটনায় বিরোধী দলগুলি তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘রাজ্যে শিক্ষা ও পুরসভা সহ একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ক্ষেত্রেও হয়তো তেমনটাই হয়েছে।’ যাঁরা ওই পদে চাকরি পাওয়ার যোগ্য ছিল তাঁদের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দিয়ে দলের লোককে চাকরি পাইয়ে দিতে এমন কৌশল নেওয়া হয়েছিল কিনা তার তদন্ত দাবি করেছেন মৃত্যুঞ্জয়বাবু। যদিও শাসকদল তৃণমূলের সাফাই, এটা ডাকযোগে এসেছে। যদি কোনও গলদ থাকে তাহলে সেখানেই হয়েছে। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘আগে দেখতে হবে দোষ কার। এতো এসেছে ডাকযোগে। তাই ডাক বিভাগেরই ভুল নাকি সেই বিষয়টি দেখতে হবে।’