গঙ্গারামপুর: ইতিহাস প্রসিদ্ধ বাণগড়, বখতিয়ার খলজির সমাধি এবং আতাশাহের দরগা পরিদর্শন করলেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলে গঙ্গারামপুর ব্লকের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন তিনি।
এদিন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বখতিয়ার খলজির সমাধি, বাণগড়, আতাশাহের দরগা, ঊষা অনিরুদ্ধের বিবাহের পাথরের কলাগাছ পরিদর্শন করেন। প্রতিটি স্থানের ধর্মীয় এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। প্রতিটি ইতিহাস বিজড়িত স্থান সম্পর্কে বিশদে ব্যাখ্যা করেন ইতিহাস গবেষক ডঃ সমিত ঘোষ ও সুকুমার সরকার। পাশাপাশি, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাণগড় নিয়ে কথা বলেন। তবে এই পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি আলাপনবাবু। এদিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা, মহকুমা শাসক পি প্রমোদ, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মনোতোষ মণ্ডল, ইতিহাস গবেষক ডঃ সমিত ঘোষ, বঙ্গরত্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত সাহিত্যিক সুকুমার সরকার, গঙ্গারামপুর থানার আইসি শান্তনু মিত্র সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, আজ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামীদিনে তিনি এবিষয়ে হয়তো বিবেচনা করবেন এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে উন্নয়নমূলক কোনও কিছু করবেন বলে আশা রাখছি।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ইতিহাস প্রসিদ্ধ গঙ্গারামপুরের বাণগড়। কিন্তু ঐতিহাসিক এই বাণগড় পুরোপুরি খননকার্য হয়নি। ১৯৩৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে ও ডঃ কুঞ্জগোবিন্দ গোস্বামীর নেতৃত্বে প্রথমবার খননকার্য শুরু হয়। তাতে উঠে আসে বেশ কিছু ধ্বংসাবশেষ। ১৯৬১ সালে পাটনা ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্বল্পকালীন খননকার্য হয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরফে ফের ২০০৯ সালে বাণগড়ে তৃতীয় দফায় খননকার্য শুরু হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত চলে সেই খননকার্য। এতে উঠে আসে প্রাচীন ইতিহাসের বিস্ময়কর তথ্য। কিন্তু মাত্র ২ বছরের সেই খনন বন্ধ হয়ে য়ায়। মাটির নীচে চাপা পড়ে যায় অনেক অজানা ইতিহাস। কারণ ইতিহাসবিদদের মতে বাণগড় সভ্যতা বহু হাজার বছরের প্রাচীন। কেন্দ্রের মন্ত্রী থেকে শুরু করে বহু আমলা বাণগড়ে পরিদর্শনে এসেছেন। বাণগড়ের গুরুত্ব উপলদ্ধি করেছেন। আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত খনন ও পর্যটনক্ষেত্র গড়ে তোলার। কিন্তু তারপরেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।