হরিশ্চন্দ্রপুর: গ্রামের মহিলাদের ঋণ করে দেওয়ার নাম করে প্রতারণা। আধার কার্ডের মাধ্যমে মহিলাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে লোনের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি মাইক্রোফিনান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, গ্রামের মহিলারা কোনও ঋণই পাননি। কিন্তু সংস্থা থেকে বারবার ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য বাড়িতে লোক চলে আসছে। সংস্থার লোকেরা চাপ দিচ্ছে অবিলম্বে বকেয়া ঋণের টাকা শোধ করতে হবে নইলে তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এরপরই ওই গ্রামের লোকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ঋণ প্রদানকারী সংস্থার প্রতিনিধিকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ওই মাইক্রোফিনান্স সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী এলাকায় এসে এই সমস্যা সমাধান না করলে তাঁরা ওই এজেন্টকে ছাড়বেন না। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংনদিয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভালুকায় একটি বেসরকারি ঋণ প্রদান সংস্থার অফিস রয়েছে। বর্তমানে সেই অফিসটি রয়েছে তুলসীহাটায়। সেই অফিসের কর্মীরা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে গ্রামের মহিলাদের দলভিত্তিক লোন প্রদান করেন। কয়েক মাস আগে এই সংস্থারই এক কর্মী শিবা রায় গাংনদীয়া গ্রামে এসে বেশ কয়েকজন মহিলার আঙুলের ছাপ নেন। জানান যে, তাঁদের বড় অংকের ঋণ করে দেবেন। কিন্তু কোনও মহিলাই ঋণ পাননি। তারপরে তিনি ওই সংস্থা থেকে ট্রান্সফার হয়ে অন্য জায়গায় চলে যান। এরপরই ওই মহিলাদের কাছে সংস্থার কর্মীরা এসে বারবার ঋণ পরিশোধ করার জন্য কিস্তি দেওয়ার চাপ দিতে থাকে। এদিনও বিকি নুনিয়া নামে এক কর্মী ওই গ্রামে এসে অবিলম্বে মহিলাদের ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ দেন এবং সেই টাকা না দিলে তাঁদের দেখে নেওয়া হবে বলেও জানান। এরপরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ওই গ্রামের সাধারণ মানুষ।
ওই গ্রামের এক গৃহবধূ বুধিয়া বিবি জানান, এর আগে তিনি ওই সংস্থা থেকে লোন নিয়েছিলেন। সেই লোন পরিশোধও করে দিয়েছেন। তারপরও সংস্থার প্রতিনিধি এসে বারবার তাঁকে কিস্তি পরিশোধ করার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। সংস্থার কর্মীর বক্তব্য, নতুন করে আবার লোন হয়েছে। অথচ নতুন করে তিনি কোনও লোনই নেননি।
অভিযুক্ত সংস্থার কর্মী বিকি নুনিয়া বলেন, ‘আমি এই সংস্থায় রিকভারি এজেন্ট হিসেবে এক মাস হল যোগদান করেছি। এর আগে এই এলাকায় অন্য কর্মী কাজ করতেন। অভিযোগটা তাঁর বিরুদ্ধে। আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না। অফিসে সরাসরি গেলেই এই সমস্যার সমাধান হবে।‘
তবে ওই সংস্থার হেড অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা সংবাদমাধ্যমে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এদিকে খবর লেখা পর্যন্ত গ্রামবাসীরা ওই এজেন্টকে গ্রামে আটকে রেখেছে বলে জানা গিয়েছে।