সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: খোদ শাসকদলের মন্ত্রীর গড়ে বোর্ড গঠন করল জোট! শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুর এক নম্বর ব্লকের মহেন্দ্রপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে জোট বোর্ড গঠন করেছে। নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে এর আগে এই দুটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত করে দিয়েছিল প্রশাসন। মামলা গড়িয়েছিল হাইকোর্টে। অবশেষে শনিবার হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তার ঘেরাটোপে হরিশ্চন্দ্রপুর এবং মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করেছে জোট। তবে হরিশ্চন্দ্রপুরে বোর্ড গঠন করতে তাদের বিজেপির মদত নিতে হয়েছে। মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেনের বাড়ি। খোদ রাজ্যের মন্ত্রীর খাস তালুকে এই জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েত শাসকদলের হাতছাড়া হওয়ায় মন্ত্রীর ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে দলের একাংশ। দলের রাজ্য নেতৃত্ব মন্ত্রীর এই পারফরমেন্সে খুশি নয় বলে দলীয় সূত্রের খবর। যদিও এই ব্যাপারে মন্ত্রী তজমুল হোসেন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বোর্ড গঠনে কংগ্রেসের বিজেপির হাত ধরা নিয়ে শাসকদলের হরিশ্চন্দ্রপুর এক ব্লক যুব সভাপতি জিয়াউর রহমানের কটাক্ষ, কংগ্রেস কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে, আবার পশ্চিমবঙ্গে এসে তারা বিজেপির হাত ধরছে, মানুষ সবই দেখছে।
সিপিআইএম এবং কংগ্রেস জোটের দখলে গিয়েছে মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। প্রধান হয়েছেন মৌসুমী দাস এবং উপপ্রধান জুল্লু রহমান। অন্যদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস, সিপিআইএম এবং বিজেপি হাত ধরাধরি করে বোর্ড গঠন করেছে। কংগ্রেসের আজিজা সুলতানা প্রধান ও বিজেপির অজয় পাসওয়ান উপপ্রধান হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌস বলেন, ‘হরিশচন্দ্রপুর এবং মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত আমরা দখল করেছি। আগামী পাঁচ বছর আমরা এই গ্রাম পঞ্চায়েতে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকব। কোনওরকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জোট নেতা মোস্তাক আলমের বক্তব্য, ‘মানুষ সত্য এবং ন্যায়ের পাশে রয়েছে। তৃণমূলকে উৎখাত করতে মানুষ জোটের পক্ষে ভোট দিয়েছে।’
এবিষয়ে বিজেপির উত্তর মালদা জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়ালা জানান, গোটা রাজ্যে তৃণমূল কাটমানি এবং চুরির রাজত্ব চালাচ্ছে। মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়েছে।
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে শাসকদলের হরিশ্চন্দ্রপুর এক ব্লক যুব সভাপতি জিয়াউর রহমানের বক্তব্য, ‘আমরা মানুষের রায় মাথা পেতে নিয়েছি। এবার বিরোধী আসনে থেকে মানুষের জন্য লড়াই চালাব।’ তাঁর কটাক্ষ কংগ্রেস কেন্দ্রে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে, আবার পশ্চিমবঙ্গে এসে তারা বিজেপির হাত ধরছে, মানুষ সবই দেখছে।