খোকন সাহা, বাগডোগরা: বাগডোগরা বিমানবন্দর (Bagdogra airport) সম্প্রসারণের জন্য অধিগৃহীত জমি থেকে চুরি (Theft) গিয়েছে প্রায় ৯০০টি গাছ (Tree)। কালো শিরীষ, কাটা শিরীষ, জারুল, মিনজিরি, চাপ, সোনালু সহ আরও বিভিন্ন ধরনের গাছ ছিল সেখানে। চুরি যাওয়া গাছের বাজারমূল্য কয়েক কোটি টাকা।
কয়েক মাস ধরে গাছগুলি চুরি হলেও হেলদোল নেই বাগডোগরা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের (Airport authority)। সূত্রের খবর, পুলিশে অভিযোগ জানিয়েই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশও এই গাছ চুরির কিনারা করতে পারেনি বলে অভিযোগ। বাগডোগরা থানার ওসি নির্মলকুমার দাস আবার দাবি করেছেন, বাগডোগরা থানায় চুরির অভিযোগই দায়ের হয়নি।
বিমানবন্দরের জয়েন্ট জেনারেল ম্যানেজার ভূদেব সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘আমার এবিষয়ে কিছু জানা নেই।’ বিমানবন্দরে ডিরেক্টর মহম্মদ আরিফ ফোন না ধরায় তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণের জন্য ১০৪.৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমিতে সীমানা প্রাচীর দেওয়ার কাজ চলছে। এরই মধ্যে গাছগুলি চুরি হয়ে যাচ্ছে। এদিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাগডোগরা বন বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে গাছগুলিতে নম্বর লাগানো হয়েছে। কেটে নেওয়া কিছু গাছের গোড়ার অংশ রয়ে গিয়েছে। কিছু গুঁড়ি আবার কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
অধিগৃহীত জমির পাশেই রয়েছে ডিগরাভিটা গ্রাম। সেখানে বেশ কিছু বাড়ির সামনে, রাস্তার পাশে গাছের ডালপালা ডাঁই করে রাখা রয়েছে জ্বালানি হিসেবে। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, অনেকদিন ধরেই গাছ চুরি যাচ্ছে। তারবান্ধা, ডিগরাভিটা, মুনি, ঘোষপুকুর, বাগডোগরা, চোপড়া, ইসলামপুর এলাকায় গাছগুলি কেটে ট্রাকে তুলে পাচার করা হয়েছে।
ডিগরাভিটার বাসিন্দা মহম্মদ বাচ্চু বলছেন, ‘এই জমিতে ঝোপঝাড় ছিল। ঝোপের মধ্যে চিতাবাঘের আস্তানা ছিল। এজন্য গাছগুলি কেটে নিয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এই গ্রামের কিছু মানুষ ডালপালাগুলো কুড়িয়ে এনে রেখেছে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য।’
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, অধিগৃহীত জমিতে প্রায় আড়াই হাজার গাছ ছিল। কিন্তু এখন কেটেকুটে অনেকটা এলাকাই সাফ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কেন মুখ বুজে, সেখানেই আসল ধন্দ।