Friday, March 29, 2024
Homeরাজ্যউত্তরবঙ্গবাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ ভুটানগেট, করজোড়ে খোলার আর্জি স্থানীয়দের

বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ ভুটানগেট, করজোড়ে খোলার আর্জি স্থানীয়দের

নাগরাকাটা: কয়েক দশক ধরে যেখানে গেট ছিল তা করোনার সময় থেকে বন্ধ। সেই স্থানে দেড় কিলোমিটার দূরের একটি গেট খুলেছে বটে। তবে ঘুরপথে যাত্রা যন্ত্রণার কারণে সেখান দিয়ে স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্য হয় না বলেই অভিযোগ। পুরোনো গেট খোলা হবে এমন আশায় দিন গুনছিলেন শ্রমিক মহল্লার হাজার দশেক বাসিন্দা। সম্প্রতি তাঁদের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে, বাঁশ দিয়ে অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা গেটটিকেও তারজালি দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়ার কথা শুনে। সব মিলিয়ে গেট ইস্যুতে বর্তমানে দারুণ তেতে রয়েছেন নাগরাকাটার ভুটান সীমান্তের জিতি চা বাগানের বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয়দের একজোট হয়ে গেট খোলার দাবিতে সরব হতেও দেখা গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা বাণিজ্য কিংবা যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গোটা এলাকা বর্তমানে শ্মশানের রূপ নিয়েছে। রুটি রুজির সন্ধানে বহু লোক বাইরে চলে যাচ্ছেন। সমস্যার কথা জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের নানা স্তর, ভুটান প্রশাসন থেকে শুরু করে এলাকার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জন বারলাকেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দিল্লিতে গিয়ে যথাস্থানে এব্যাপারে কথা বলবো। নাগরাকাটার বিডিও পঙ্কজ কোনার বলেন, এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। ওঁরা আমাদের কাছে এলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া হবে। নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুরের বক্তব্য, জিতি সীমান্তের সমস্যাটি যে গুরুতর তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমাকেও লিখিতভাবে জানিয়েছে। দ্রুত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে প্রশাসনের উঁচু মহলে সবকিছু জানিয়ে দেওয়া হবে।

২০২০তে লকডাউন শুরু হওয়ার আগে জিতির সীমান্ত একদম উন্মুক্ত ছিল। দু’দেশের বাসিন্দাদের অবাধ যাতায়াতের পথে কোনও বাধাই ছিল না সেখানে। সীমান্ত পেরিয়ে ভুটান থেকে বহু মানুষ এসে জিতি বাজার থেকে কেনাকাটি করতেন। অন্যদিকে এদিকের বাসিন্দারা ওপারে যেতেন মালপত্র ফেরি থেকে শুরু করে শ্রমিকের কাজ করতে। এলাকার অর্থনীতির মূল স্তম্ভই ছিল দু’দেশের লেনদেন।

২০২২ এর সেপ্টেম্বরে ভুটান ডুয়ার্সের সমস্ত গেটই খুলে দেয়। জিতিতেও গহেরা লাইন নামে একটি স্থানে গেট খোলে। তবে স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, সেটি মূল গেট নয়। স্রেফ গাড়ি চলাচলের জন্য। যা আগে থেকেই ছিল। অন্যদিকে জিতি বাজার লাগোয়া ১০ মিটার চওড়া মূল গেটটিকে অস্থায়ীভাবে বাঁশের বেড়া লাগিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানকার মহম্মদ ফিরোজ নামে এক বাসিন্দা বলেন, দিন কয়েক আগে ভুটানের সামচি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা এসে জানায় ওই বাঁশের বেড়াও স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। অথচ করোনার সময়ে দু’পাশে তারজালি কিংবা ইঁটের দেওয়াল তৈরি করা হলেও ওই ১০ মিটারের অংশটিকে ছেঁড়ে রাখা হয়েছিল। তখন আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল পরে স্থায়ী গেট তৈরি করে দেওয়া হবে। ভুটান এখন সত্যিই যদি এমনটা করে তবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

মেহবুব হুসেন নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘সীমান্তের সমস্ত স্থানের গেট খুলে গিয়েছে। অথচ এই গেট কেন খোলা হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। উলটে পাকাপাকি বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। দেড় কিলোমিটার দূরে যে গেট রয়েছে সেখান দিয়ে আগে থেকেই গাড়ি চলাচল করত। মানুষের মূল যাতায়াত ছিল যে গেট আমরা খোলার কথা বলছি সেটা দিয়েই। দুই দেশের সরকারের কাছেই জোড় হাত করে বলছি আমাদের বাঁচান।’

Solanki Paul
Solanki Paulhttps://uttarbangasambad.com/
Solanki Paul is working as Sub Editor based in Darjeeling district of West bengal since 2020. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular