বালুরঘাট: শতাব্দী প্রাচীন বালুরঘাটের বোল্লা কালী সাজবেন হিরের অলংকারে। মায়ের হাতের খড়গ থেকে পুরো শরীর পর্যন্ত সোনার গয়নায় মোড়া থাকে। কিন্তু এবার তার হাতে হিরের আংটিও থাকবে। জানা গিয়েছে, প্রায় তিন ভরি সোনা দিয়ে তৈরি ওই আংটিতে তিনটি বড় মাপের হিরে বসানো থাকবে। বালুরঘাটর এক ব্যাবসায়ীর তৎপরতায় প্রথম ওই হিরের আংটি আনা হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর মায়ের পুজোর আগেই ওই আংটি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ অক্টোবর পুকুর থেকে কাঠামো তোলার মধ্য দিয়ে বোল্লা রক্ষাকালী পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই কাঠামো মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করা এবং নতুন মূর্তি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। শুধু দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নয় রাজ্য এমনকি ভিন রাজ্য ও বাংলাদেশ থেকেও লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয় এই পুজোয়। একদিন পুজো হলেও চারদিন ধরে মেলা বসে। প্রায় চারশোরও বেশি বছরের পুরাতন এই মেলা প্রতি বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার শুরু হওয়ায় এই মেলায় কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। হিন্দু-মুসলিম সব ধর্মের মানুষের সমাগমে প্রতিবছর তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহামিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুজোর রাতে কালিপুজোর মানত হিসাবে কয়েক হাজার পাঁঠা বলির প্রচলন রয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই মেলা সুষ্ঠুভাবে করতে জেলা প্রশাসন ও মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে দফায় দফায় বৈঠক করে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। পুজোয় ভক্তরা খাগড়া, কদমা বাতাসা সহ নানা ভোগ নিবেদন করেন। গত সাতদিন ধরে মন্দির চত্বরে চলছে ভোগ তৈরির কাজ।
মন্দির কমিটির সভাপতি অর্ঘ্য সরকার বলেন, ‘এবারের পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। এবারের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ মায়ের হাতে হিরের আংটি। এই প্রথম মা হিরের অলংকার পরিধান করবেন।’ শোনা যায়, এই এলাকার জমিদার বল্লভ মুখোপাধ্যায়ের নামানুসারে জায়গাটির নাম হয়েছে বোল্লা। কয়েকশো বছর আগে স্থানীয় এক মহিলা স্বপ্নাদেশে কালো একটি পাথরখণ্ড কুড়িয়ে পেয়ে সেটিকে প্রথম মাতৃরূপে পুজো শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন নথিপত্রে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলেও এই বোল্লা কালীপুজোর উল্লেখ পাওয়া যায়।