তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: করোনার সময় নিরাপত্তা জোরদার করতে মাতৃসদনে লাগানো হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। বর্তমানে চিকিৎসাকেন্দ্রের পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরার সবক’টিই বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। আর এই সুযোগ নিয়ে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। নেশাগ্রস্তরাও ঢুকে পড়ছে মাতৃসদনের ঘরের ভেতরে। কিন্তু বিকল সিসি ক্যামেরার ‘সৌজন্যে’ দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। প্রশ্নের মুখে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের এই চিকিৎসাকেন্দ্রের নিরাপত্তা।
মাতৃসদনে প্রায়ই চুরির ঘটনা সামনে আসছে। শুক্রবার দুপুরে কাজ করার সময় অফিস অ্যাসিস্ট্যান্টের সাইকেল চুরি হয়েছে। শনিবার এ বিষয়ে শিলিগুড়ি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জানান ওই অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট টিঙ্কু হালদার। তাঁর অভিযোগ, ‘প্রায় পাঁচ মাস ধরে চিকিৎসাকেন্দ্রের সিসিটিভিগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। সিসিটিভি নষ্ট থাকার জন্য চোরকে শনাক্ত করতে সমস্যা হচ্ছে।’ শুধু সাইকেল নয়, জানা গিয়েছে, কখনও চুরি হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসাকেন্দ্রের ভেতরে থাকা করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করার কিয়স্ক। কখনও আবার চিকিৎসার কাজের জিনিস।
শহরের চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েকশো রোগী আসেন। মাতৃসদনে প্রসূতি বিভাগ রয়েছে। রোজ প্রায় একশোর কাছাকাছি অন্তঃসত্ত্বার ভিড় দেখা যায়। সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় তাঁদের সুরক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শুধু চোর না, মাঝেমধ্যে নেশাগ্রস্তরাও ঢুকে পড়ে চিকিৎসাকেন্দ্রের ভেতরে। সম্প্রতি এক নেশাগ্রস্ত লোক চিকিৎসাকেন্দ্রের একটি ঘরে ঢুকে পড়ে। একজন রোগী দেখতে পেয়ে চিৎকার করায় লোকজন এসে লোকটিকে চিকিৎসাকেন্দ্রের বাইরে বের করে দেন।
হাসপাতালের চিকিৎসক দেখাতে এসে মিলি সরকারের অভিযোগ, ‘এখানে প্রসূতি বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি বিভাগ রয়েছে। সেখানে চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে কেন নিরাপত্তার এই হাল? দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোকে ঠিক করা উচিত।’ এক রোগীর মা অন্তরা রায় জানান, সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক না থাকায় তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। কখন কী হয়?
এখানেই শেষ নয়, চিকিৎসাকেন্দ্রের নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানোর দাবি তোলেন রোগীর আত্মীয়পরিজনরা। জানা গিয়েছে, বর্তমানে চিকিৎসাকেন্দ্রে মাত্র দুজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শিলিগুড়ি পুরনিগমের স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, ‘প্রায়শই চুরি হচ্ছে, সে খবর আমার জানা। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো যে অকেজো, সে বিষয়টি জানতাম না। আমি কালই দেখে ব্যবস্থা নেব।’