কলকাতা: উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিটে দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আদালত অবমাননার রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের দেওয়া নির্দেশ ১০ মাস পরও কেন কার্যকর করা হয়নি, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিচারপতি। শুক্রবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও এডিজি, সিআইডিকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন বিচারপতির এই নির্দেশে খুশি মৃত দুই ছাত্রের পরিবার।
মৃত ছাত্র রাজেশ সরকারের মা ঝর্ণা সরকার বলেন, ‘আমাদের একটাই চাওয়া। তা হল ছেলের খুনিদের কঠোর শাস্তি। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা আমাদের কাছে ভগবান। রাজ্যের সরকারের এনআইএ তদন্তে অসহযোগিতা নিয়ে তাঁর নির্দেশে আমাদের আশা ফের জেগে উঠেছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে ছাত্র বিক্ষোভ চলে। পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের খণ্ডযুদ্ধ বাধে। পুলিশের গুলিতে তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকার নামে দুই ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন এলাকা উত্তপ্ত ছিল। প্রকৃত তদন্তের দাবিতে পরিবারের সদস্যরা বাড়ির পাশে দেহ কবর দিয়ে রাখেন। সিবিআই তদন্তের দাবিতে আন্দোলনের জেরে দু’মাস বন্ধ ছিল দাড়িভিট স্কুল।
এই ঘটনায় তদন্ত করছিল সিআইডি। পরে মামলা হাইকোর্টে পৌঁছালে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা গত বছরের ১০ মে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ এখনও কার্যকর করা হয়নি। আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, রাজ্য সরকার এখনও কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়নি। সিআইডি তদন্তের নথি এনআইয়ের হাতে তুলে দেয়নি। তখনই বিচারপতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ এপ্রিল। ওইদিন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও সিআইডির এডিজিকে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে কেন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি।
অপর এক মৃত ছাত্র তাপস বর্মনের মা ঝর্ণা বর্মন বলেন, ‘হাইকোর্টের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, এনআইএ তদন্তে সহযোগিতা করে আমাদের ছেলের খুনিদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’