রায়গঞ্জ: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, পুর নিয়োগ দুর্নীতির পর এবার সামনে আসছে একের পর এক সমবায় দুর্নীতির অভিযোগ। আলিপুরদুয়ার, সোনারপুরের পর এবার রায়গঞ্জের বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়বাড় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কোটি কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে পরিচালন সমিতির সদস্যদের বিরুদ্ধে। বড়বাড় সমবায় সমিতির মোহিনীগঞ্জ ও বিন্দোল শাখা মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ। ঘটনায় সমিতির ম্যানেজার, ক্যাশিয়ার ও এজেন্টরা গা ঢাকা দিয়েছেন। বুধবার সমিতির বিন্দোল শাখায় প্রায় শতাধিক গ্রাহক বিক্ষোভ দেখান। কয়েক মাস হল সমবায় সমিতিটি পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন পরিচালন সমিতির সদস্যরা। অবিলম্বে টাকা ফেরতের পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন গ্রাহকরা।
প্রাক্তন শিক্ষক অশোক কুমার রায় জানান, সমবায় সমিতিটি যেহেতু রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের অধীনে, তাই অবসর নেওয়ার পর দু লক্ষ টাকা তিনি গচ্ছিত রাখেন। প্রায় মাস চারেক আগে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিলেও এখন সমিতির পরিচালন কমিটির কর্মকর্তারা তালা মেরে পালিয়েছেন। প্রায় এক বছর ধরে অচলাবস্থা চলছে। এরকম অনেকে প্রতারিত হয়েছেন। তাঁর দাবি, প্রশাসন সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি টাকা ফেরতের নির্দেশ দিক।
এদিন বিন্দোলের পাশাপাশি মোহিনীগঞ্জের সমবায় সমিতির কার্যালয়েও তালা মারা অবস্থায় দেখা যায়। রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান রতন চৌধুরী জানান, ইতিমধ্যে এআরসিএস এবং আরসিএসকে বড়বাড় সমবায় সমিতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।
বিন্দোলের সমবায় সমিতির এজেন্ট গৌতম রায় জানান, এআরসিএসের কাছে নতুন কমিটির নাম পাঠানো হয়েছে। রাজ্য অনুমোদন দিলেই সমিতির কাজকর্ম শুরু হবে। সমিতির যে সম্পত্তি আছে তা বিক্রি করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তাঁর আরও দাবি, রায়গঞ্জ কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের কাছে তাঁদের এক কোটি টাকা জমা আছে। ম্যানেজমেন্টের জন্য গ্রাহকদের পাশাপাশি এজেন্টরা সমস্যায় পড়েছেন। এবিষয়ে বড়বাড় সমবায় সমিতির ম্যানেজার গোপাল মালাকার ফোন না ধরায় তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কোটি কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ওঠায় গতকালের পর এদিনও বড়বাড় সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের অফিসের সামনে বিক্ষোভ চলে আমানতকারীদের। টাকা ফেরতের বিষয়ে প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী মঙ্গলবার গ্রাহকরা মোহিনীগঞ্জে বড়বাড় সমবায় সমিতি দপ্তর ঘেরাও করার উদ্যোগ নিয়েছেন।