রায়গঞ্জ: বছর পঞ্চাশের দিনমজুর সুশীলচন্দ্র রবিদাস। যেদিন কাজ জোটে, সেদিনই পেট ভরে। নিজের সম্পত্তি বলতে ১৩ শতক জমি। সেখানেই রয়েছে বেড়ার বাড়ি। মাথায় টিনের ছাউনি। সামনে যেটুকু জায়গা আছে সেখানে সামান্য শাক-সবজি লাগিয়েছেন নিজের জন্য। কিন্তু ওই সামান্য জায়গার উপরে নজর পড়েছে এলাকার তৃণমূল নেতাদের। সুশীলবাবুর অভিযোগ, ওই জায়গা জবরদস্তি দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি মাদ্রাসা।
এমনই অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় চাকুলিয়া। ইতিমধ্যে সুশীলবাবু এলাকার ১৬ জনের বিরুদ্ধে কানকি পুকিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুধু তাই নয় নালিশ জানিয়েছেন পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি রাজ্যপাল, এসসি কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, অন্যের রায়ত জমি দখল করে কাঠামো নির্মাণ করা যায় কিনা?
আরও অভিযোগ, সুশীলবাবু ১৬ জনের নামে কানকি পুলিশ ফাঁড়িতে লিখিত নালিশ জানালেও কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উলটে অভিযুক্তরা বাঁশের খুঁটি পুঁতে টিনের ছাউনি দিয়ে ওই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার সুশীলবাবু বলেন, ‘আমার দখলে থাকা রেজিষ্ট্রি করা জমি জোর করে দখল করে পিলার ও টিন দিয়ে ঘর তুলে দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আমি আসামীদের বাধা দিতে গেলে আমাকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখায়। পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। তাই আমার জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানিয়েছি।’
এই পরিস্থিতিতে সুশীলবাবুর পাশে দাঁড়িয়েছেন আইনজীবী মনতোষ সরকার। তিনি বলেন, ‘একজন দুঃস্থ মানুষের জমি এভাবে জোর করে দখল করা যায় না। আমরা ওঁনাকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি। অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই এলাকার পরিচিত তৃণমূলকর্মী। তাই পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’ এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালা বলেন, ‘চাকুলিয়া ব্লকের নেতাদের কাছে বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশ দেব।’