নাগরাকাটা: ডব্লিউবিসিএস সহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বাংলা ভাষা বাধ্যতামূলক করায় ক্ষোভের কথা উঠে এল খোদ রাজ্যের শাসকদলের সংগঠন তৃণমূল কংগ্রেসের হিন্দি প্রকোষ্ঠের জলপাইগুড়ির শীর্ষ নেতার কন্ঠে। সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি অমরনাথ ঝা এব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনি একটি স্মারকলিপিও পাঠাতে চলেছেন বলে জানান।
অমরনাথ ঝা বলেন, ২০১১ সালের জণগণনার হিসেব অনুযায়ী গোটা রাজ্যে হিন্দি ভাষীর সংখ্যা ছিল ৭.৬৯ শতাংশ। উর্দু ও সাঁওতালি ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষের সংখ্যা ছিল রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ২.১৪ ও ১.২৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে ১ কোটি ৪৪ লক্ষ মানুষের মূল ও সংযোগকারী ভাষা হিসেবে হিন্দিরই প্রচলন ছিল। এরপর গত ১৩ বছরে সংখ্যাটি যে আরও বেড়েছে তা বলাই বাহুল্য। হিন্দিভাষী পরিবারের ছেলেমেয়েরা মূলত হিন্দি মাধ্যমের স্কুল কলেজেই পড়াশোনা করে। চাকরির পরীক্ষায় বাংলা বাধ্যতামূলক করে দেওয়ায় তাঁরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
অমরনাথবাবুর বক্তব্য, রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক হিন্দি মাধ্যমের স্কুল রয়েছে। হয়েছে হিন্দি মাধ্যমের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। ডুয়ার্সের প্রচুর সংখ্যক ছেলেমেয়ে হিন্দি মাধ্যমেই পড়াশোনা করে। ওই সমস্ত স্কুলে বাংলা ভাষা পড়ানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের মেন্টর পদে থাকা এই নেতা জানান, ডব্লিউবিসিএস, পুলিশ, আবগারি দপ্তর সহ আরও নানা সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বাংলা বাধ্যতামূলক করে দেওয়ায় হিন্দি মাধ্যমের ছেলেমেয়েদের চাকরি পাওয়ার আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীত নিবেদন হিন্দিতেও পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। পাশাপাশি হিন্দি মাধ্যমের স্কুলে বাংলা ভাষাকে একটি বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য সেক্ষেত্রে শিক্ষক নিয়োগও প্রয়োজন।
উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে প্রচুর সংখ্যক হিন্দি মাধ্যমের স্কুল রয়েছে। এক-একটি স্কুলে ছাত্র সংখ্যা এক হাজারের বেশি। এমনও স্কুল রয়েছে যেখানে আড়াই থেকে তিন হাজার ছাত্র পড়াশোনা করে। ওই পড়ুয়ারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স শেষ করে সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসতে গেলে বাংলা না জানার কারণে বঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে। আগে এমনটাও হয়েছে প্রশ্নপত্র বুঝতে না পেরে সাদা খাতা জমা দিয়েই তাঁরা চলে এসেছেন বলে জানান অমরনাথবাবু। মুখ্যমন্ত্রী সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন বলে আশা করছেন তিনি।