চাঁচল: দীর্ঘদিন ধরেই চাঁচল থানার বিভিন্ন এলাকায় রমরমিয়ে চলছে মাদকের কারবার। যার ফলে যুবসমাজের মধ্যে বাড়ছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। চাঁচলের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হচ্ছে ব্রাউন সুগার এবং গাঁজা। কোথাও বিক্রি হচ্ছে নির্দিষ্ট বাড়ি বা দোকান থেকে, আবার কোথাও ফোন করলেই নির্দিষ্ট স্থানে এসে নেশার দ্রব্য দিয়ে যাচ্ছে পেডলাররা। যে এলাকাগুলোতে ব্রাউন সুগার বিক্রি হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের নুরগঞ্জ, চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের সাঞ্জীব, সাহেবগঞ্জ, মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নদীশিক এলাকা, ভগবানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুর এলাকা।
জানা গিয়েছে, নুরগঞ্জে এক মুদি দোকানি দোকানের আড়ালে ব্রাউন সুগারের ব্যবসা চালাচ্ছেন। তার কাছে পুড়িয়া করে বিক্রি হচ্ছে ব্রাউন সুগার। প্রতি পুড়িয়ার দাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। কিন্তু চেনা মুখ না দেখলে ওই দোকানি কখনই পুড়িয়া দিতে চান না।
নদীশিক এলাকায় গ্রামের প্রবেশপথে একটি বাড়ি থেকে ব্রাউন সুগার বিক্রি হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সেখানে এক বৃদ্ধ বিক্রি করছে বাউন সুগার। মালতিপুর, গোবিন্দপাড়ার বিভিন্ম জায়গাতেও বিক্রি হচ্ছে ব্রাউনসুগার। এছাড়াও চাঁচলের এই এলাকাগুলিতে ব্রাউন সুগারের আমদানি হচ্ছে কালিয়াচক এবং হরিশ্চন্দ্রপুর থানার খুড়িয়ালি এলাকা থেকে। চাঁচল মহকুমার মধ্যে হরিশ্চন্দ্রপুরের খুড়িয়ালিতেই সবথেকে বেশি ড্রাগস ডিলারদের দৌড়াত্ম্য। সেখানে বেশ কয়েকটি জায়গায় ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা প্রতি গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ব্রাউন সুগার।
মূলত দুই ধরনের মানুষ যুক্ত থাকছে এই ব্যবসায়। কিছু মানুষ শুধুমাত্র আর্থিক মুনাফার লোভে। কিছু মানুষ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ার পর এই ব্যবসায় চলে আসছে শুধু নেশা করার জন্য। যেহেতু এই নেশা অনেকটাই ব্যয়বহুল। মাঝে মাঝে পুলিশি সক্রিয়তায় অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে ব্যবসা বন্ধ করলেও এখনও অনেকে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা দীপক চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘পুলিশ প্রশাসনের নজর এড়িয়ে হবে এটা কি সম্ভব? পুলিশকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। চোখের সামনে বহু পরিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। এলাকার মানুষদেরকেও এই নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে। যাদের পরিবারের ছেলেরা আসক্ত হচ্ছে তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে।‘
মালদা জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন বলেন, ‘একথা সত্য, যুবসমাজ এভাবে ধ্বংসের মুখে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা পুলিশকে এর আগেও বলেছি, আবারও বলবো। এই জিনিসকে বাড়তে দেওয়া যাবে না। সঙ্গে প্রশাসনের তরফে কীভাবে সচেতনতামূলক প্রচার চালানো যায় সেই নিয়েও ভাবছি আমরা।‘