পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের প্রয়াত প্রাক্তন সভাপতি কৃষ্ণ কল্যানীর ভাই শিবু কল্যানীর জয়পুর চা বাগানের শ্রমিক ও কর্মচারীরা বেতন এবং মজুরি না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দিলেন। বাগানের শ্রমিক ও স্টাফ এবং সাব স্টাফদের কয়েকমাসের বেতন ও মজুরি দিচ্ছেনা বাগান। বাগান ছেড়ে চলে গিয়েছেন ম্যানেজারও। এই অবস্থায় কাজ করলে কে মজুরি দেবে এই অনিশ্চতায় বাগানের কাজ বন্ধ রেখে শহরে দিনমজুরির কাজে যাওয়া শুরু করেছেন শ্রমিকেরা।জয়পুর চা বাগান বন্ধ না হলেও বাগানের অচলাবস্থা কাটাতে আগামী ১৫ জানুয়ারি নিজের অফিসে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকলেন উপ শ্রম আধিকারিক।
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার অন্তর্ভুক্ত বন্ধ রায়পুর চা বাগানের পাশেই জয়পুর চা বাগান। মোট শ্রমিক ৬৮৩ জন। বাগানের কর্মচারী আনন্দ দাস জানান, স্টাফ ও সাব স্টাফদের দুই থেকে তিনমাস বেতন বকেয়া আছে। শ্রমিকদের ৪৮ দিনের দৈনিক মজুরি পাওনা আছে।কিন্তু এইভাবে চলবে কি করে।
বাগানের গাড়ির চালক শ্যাম ছেত্রী জানান, বৃহস্পতিবার আমরা জেলা প্রশাসনককে বাগানের অচলাবস্থার কথা জানিয়েছি।বাকি আছে পুজোর বোনাস।গত মঙ্গলবার কিছু বকেয়া টাকা দেওয়ার কথা ছিল কর্তৃপক্ষের।তা না দেওয়ায় কাজ বন্ধ রেখেছি সকলে।
রাম বাহাদুর ছেত্রী নামে এক শ্রমিক জানান, গত ডিসেম্বরেও শ্রম অফিসে বৈঠক করেও মালিকপক্ষ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কিছুই মেটায় নি।
বাগানের অপর এক মহিলা শ্রমিক কর্মামায়া ছেত্রী জানান, এইভাবে মাসের পর মাস বিনা মজুরিতে কিভাবে কাজ করা যায়।এখন বাগানে পাতা তোলা না হলেও পুর্নিংর কাজ সহ অন্যান্য কাজ হচ্ছে।কিন্তু বিনা মজুরিতে কাজ করবো না। তাই কেউ কাজে যাচ্ছেন না।
শুক্রবার জয়পুর চা বাগানের পরিবেশ ছিল থমথমে।সাংবাদিক এসেছেন খবর পেয়ে অনেকেই জটলা করেন।বাগানের এই অচলাবস্থায় ম্যানেজার বাগান ছেড়ে চলে গেছেন।কে মজুরি বেতন দেবে কেউ জানেন না। তাই পেটের দায়ে অনেকেই শহর ও শহরতলীতে দিনমজুরির কাজে চলে যাচ্ছেন।
জয়পুর চা বাগান ইন্ডিয়ান টী প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী জানান, গত বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় উৎপাদন মার খেয়েছে।তাই সাময়িক সময়ের জন্য অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়েছে।আশা করছি ১৫ তারিখের বৈঠকে আশানুরুপ সুরাহা পাওয়া যাবে।
জেলা উপ শ্রম আধিকারিক শুভাগত দত্ত জানান, আগামী ১৫ তারিখ তার অফিসে জয়পুর চা বাগানের অচলাবস্থা কাটাতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে।