জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়িঃ জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলা শাসকের বাংলোর পাশেই সরকারি জমি দখল করে দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনি ভাবে চলছে হোটেল ব্যবসা। এই হোটেলের প্রায় লাগোয়া জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের দপ্তর। অদূরেই জেলা শাসকের দপ্তর। বেআইনি দখল দারেরা এতটাই বেপরোয়া যে জেলার শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকদের বাংলো এবং অফিস সংলগ্ন এলাকার জমি দখল করে ব্যবসা করতে দ্বিধাবোধ করছেন না।
জলপাইগুড়ি শহরের জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দায়িত্ব পুরসভার। বিষয়টি নজরদারির দায়িত্বও পুরসভার। শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভিআইপি এলাকায় এই জবরদখল হয়েছে। জবরদখল করা হোটেলের কাছেই বিভাগীয় কমিশনার এবং ডিএফও’র দপ্তরও বটে। এহেন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কিভাবে পুর কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় জবরদখল হয়েছে – তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হোটেলটির সংলগ্ন এলাকায় ঐতিহ্যবাহী সেন্ট মাইকেল অ্যান্ড অল অ্যাঞ্জেল চার্চ। অতিরিক্ত জেলা শাসকের বাংলোর সীমানা প্রাচীরের পেছনে রাতে মদ্যপায়ীরা ভিড় জমায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঐ এলাকায় মদের বোতলের ছড়াছড়ি। ফলে এলাকার সামাজিক পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
শুধুমাত্র জলপাইগুড়ির ভিআইপি জোনে জবরদখল সীমাবদ্ধ নেই। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল চত্ত্বরের সামনেও বেআইনি দখলদাররা হোটেল, বস্ত্র সামগ্রী, লৌহ সামগ্রীর দোকান করেছেন। ফলে হাসপাতালের প্রবেশ পথের পরিসর ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসছে। এলাকাগুলিতে জবরদখল মুক্ত করা না গেলে সমস্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
একই চিত্র উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন কর্পোরেশনের সামনের রাস্তার। সেখানেও বেআইনিভাবে অনেক দোকান পাট হয়েছে। ফলে গাড়ি যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে। যাত্রী সাধারণের পাশাপাশি পরিবহন চালকদের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। বেআইনি হোটেলের মালিক সুনীল রায় কে জমির পাট্টা আছে কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, জমির কোনও পাট্টা নেই। জমির পাট্টা বিহীন এলাকায় বেআইনি নির্মাণ হওয়া ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ কিভাবে হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সুনীল রায় বলেন তারা গরিব মানুষ। তাই রোজগারের স্বার্থে এখানে হোটেল করছেন।
জলপাইগুড়ি পুরসভার উপ পুর প্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে ভিআইপি জোনে বেআইনি নির্মাণ কাজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, জবরদখল হয়েছে – এটা ঠিক। শহরের জবরদখল হওয়া জায়গাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। নির্বাচনী বিধি নিষেধ প্রত্যাহিত হলে তারা শহরের সমস্ত বেআইনি নির্মাণ কাজ ভেঙে দেবেন। এই কাজে পুরসভা অগ্রাধিকার দেবে।