রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার (Gate)। এখান থেকে একাধিক প্রতিবেশী দেশে যাতায়াতের রাস্তাও রয়েছে। এই জন্য গত ১০ বছরে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিলিগুড়িতে এই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘দেশের অন্য প্রান্তের মতোই উত্তরবঙ্গে রেল এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। আগে উত্তর-পূর্ব ভারতের দিকে এলেই ট্রেনের গতি কমে যেত। কিন্তু বর্তমানে এই অঞ্চলে ট্রেনের গতি বেড়েছে। আগামী পাঁচ বছরে এখানকার রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সুপার ফাস্ট হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘কেন্দ্রের বর্তমান সরকার পূর্ব ভারতকে দেশের উন্নয়নের গ্রোথ ইঞ্জিন হিসাবে মান্যতা দিয়েছে।’ ২০১৪ সালের আগে উত্তরবঙ্গ সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নে সেভাবে কোনও সরকার গুরুত্ব দেয়নি বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন।
শনিবার কাওয়াখালিতে সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা খরচে কেন্দ্রের একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন এবং জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এর মধ্যে একাধিক রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ (Electrification), শিলিগুড়ি-রাধিকাপুর নতুন ডিইএমইউ ট্রেনের সূচনার পাশাপাশি দুটি জাতীয় সড়কেরও উদ্বোধন করেন। এখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং চায়ের জন্য প্রসিদ্ধ উত্তরবঙ্গের মাটিতে আসা আমার কাছে খুবই সুখের অনুভূতি।’
শিলিগুড়ির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মোদি বলেছেন, ‘উত্তরবঙ্গের এই অঞ্চল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হওয়ায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চল দিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়। উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে গতি নিয়ে আসার জন্য ২০১৪ সাল থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার সচেষ্ট। এদিন রেলপথের বৈদ্যুতিকরণ এবং নতুন রাস্তার উদ্বোধন (Inauguration) হওয়ায় গোটা উত্তরবঙ্গেই ট্রেন এবং সড়ক যোগাযোগের গতি বাড়বে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে রেল চলায় বনাঞ্চলে দূষণের মাত্রাও কমবে।’
এরপরই তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার উত্তরবঙ্গে হাইস্পিড ট্রেন চালানো শুরু করেছে। এখান থেকে বাংলাদেশে মিতালি এক্সপ্রেস চলছে। বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবে রাধিকাপুর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের অর্থ ব্যবস্থা এবং পর্যটনের উন্নতি হবে।’ বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ থেকে গুয়াহাটি এবং হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত সেমি সুপার ফাস্ট বন্দে ভারত ট্রেন চলছে। অমৃত ভারত প্রকল্পে দেশের যে ৫০০টি স্টেশনের আধুনিকীকরণ (Modernization) করা হচ্ছে, সেই তালিকায় শিলিগুড়ির স্টেশনও রয়েছে।’ তাঁর দাবি, ১০ বছরে বাংলায় রেলপ্রকল্পকে প্যাসেঞ্জার থেকে এক্সপ্রেস স্পিড করা হয়েছে। আগামী পাঁচ বছরে এটাকে সুপার ফাস্ট করা হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, আদিবাসী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী জন বারলা সহ দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জের সাংসদ সহ কেন্দ্রের রেল এবং সড়ক পরিবহণমন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।