রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: প্রেমিকের বন্ধুকে মন দিয়ে ফেলেছিল যুবতী। আর তারই বদলা নিতে গিয়ে বছর ২০-র যুবককে গুলি করে খুন করল প্রেমিক। শিলিগুড়ির দেবিডাঙ্গায় গুলি করে যুবককে হত্যার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দেবিডাঙ্গার কোয়াটার কলোনী এলাকায় বছর খানেক আগেই এসেছিল ওই যুবতির পরিবার। ওই এলাকাতেই বাড়ি মৃত যুবক এবং অভিযুক্তের। অভিযুক্ত অরুণ মাহানির সঙ্গে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল যুবতির। কিন্তু যুবতি কোয়াটার কলোনীতে আসার পর অরুণের সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টেনে অমৃত গোস্বামীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। এরপর থেকেই বারবার অমৃতকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল অভিযুক্ত। দু একবার স্থানীয় অমিও পালচৌধুরি স্কুলের মাঠে ঝামেলাও হয়।
সোমবার রাত ১০.৩০মিনিট নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয় অমৃত। এরপর রাত হলেও বাড়ি না ফেরায় পরিজনেরা খোঁজখবর শুরু করে। অনেকবার ফোন করেও ছেলের কোন খোঁজ মেলেনি। মঙ্গলবার ভোর তিনটের সময় হঠাৎ প্রধাননগর থানার পুলিশ এসে মৃতের বাবা এবং ভাইকে ডেকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় গিয়ে মৃতের বাবা সুখদেও গোস্বামী জানতে পারেন ছেলেকে মধ্যরাতে গুলি করে খুন করা হয়েছে।
এই ঘটনা এলাকায় চাউর হতেই অভিযুক্তের বাড়িতে চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। বাড়িতে ভাংচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়েই এডিসিপি সুভেন্দ্র কুমারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এরপর এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়। কিন্তু অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবিতে দফার দফার পথ অবরোধ করে উত্তেজিত জনতা। ঝাটা, বাটাম হাতে রাস্তায় নামেন মহিলারা। যদিও পুলিশ প্রতিক্ষেত্রেই মিনিট দশেকের মধ্যেই অবরোধ তুলে দেয়।
বিকেলের দিকে মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করে এলাকায় নিয়ে আসা হয়। ওই সময় গোটা পাড়ার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এলাকার শান্ত স্বভাবের ছেলেকে শেষ দেখা দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। মৃতের বাবা সুখদেও বলেন,’ছেলেটিকে বারবার মারার হুমকি দিত। বলত দেখে নেবে কিন্তু খুন করে দেবে এটা ভাবিনি।’ এদিকে অভিযুক্তের কাছে দেশী পিস্তল কোথা থেকে এল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ঘটনার পরই থানায় আত্মসমর্পণ করেছে অভিযুক্ত অরুণ মাহানি।