নকশালবাড়ি: ভোটের মুখে নকশালবাড়ি বাজারজুড়ে সরকারি জমি দখল চলছে। প্রশাসন ভোট নিয়ে ব্যস্ত। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নকশালবাড়ি বাজারে এমন জমিতে ঘর বানাচ্ছে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রে লক্ষ লক্ষ টাকায় জমি হাতবদলেরও অভিযোগ উঠছে। রাতারাতি বদলাচ্ছে জমির চরিত্র। টিনের ছাউনির দোকান হয়ে উঠছে দোতলা মার্কেট ভবন। অভিযোগ, কোনওরকম নকশা ছাড়াই এসব তৈরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে স্থানীয় এক দালালচক্র। নকশালবাড়ির অলিগলিতেও সরকারি জমিতে অবৈধভাবে তৈরি হচ্ছে মার্কেট কমপ্লেক্স।
লোকসভা ভোট ঘোষণার পরই নকশালবাড়িতে একাজ গতি পেয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। ভোটের পরই দোকানঘরগুলি বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। ওই টাকার ভাগ পৌঁছে যাবে নির্দিষ্ট জায়গায়। ডিস্ট্রিক্ট ইমপ্রুভমেন্ট (ডিআই) ফান্ড, রেল ও পূর্ত দপ্তরের জমিতে দাঁড়িয়ে নকশালবাড়ি বাজার। সেখানকার অধিকাংশ দোকান, বাড়িঘর ডিআই-এর জমিতে তৈরি। ভূমি দপ্তর সূত্রে খবর, নকশালবাড়ি বাজারে ডিআই ফান্ডের প্রায় ৪০ একরের বেশি জমি আছে। এর বেশিরভাগই দখলের মুখে। নকশালবাড়িতে সরকারি জমিতে দোকান তৈরি নতুন নয়। বহুদিন ধরেই একাজ চলছে।
স্থানীয়দের দাবি, নকশালবাড়ি বাজারে সরকারি জমি দখলের পিছনে সব দলেরই পরোক্ষ মদত রয়েছে। ভোটের মুখে এ নিয়ে কোনও দল মুখ খুলতে রাজি নয়। বাজারে ঢুকতেই নকশালবাড়ি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া ইউনাইটেড ক্লাবের পাশেই চলছে সরকারি জমি দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি। এ নিয়ে বহু অভিযোগ করা হয়েছে। বহুবার রেল, ডিআই ফান্ড থেকেও নির্মাণ বন্ধে নোটিশ জারি হয়েছিল। কিন্তু চক্রটি একে গুরুত্ব না দিয়েই নির্মাণ করছে। নকশালবাড়ির ঘাটানি মোড় লাগোয়া মাছ বাজারের সামনে এক রাতে আট থেকে দশটি দোকান তৈরি হয়েছে। সামান্য এগোলেই সিপিএম পার্টি অফিসের সামনেও বালি-পাথর ফেলে ডিআই ফান্ডের জমি দখল হচ্ছে। শেডগুলিতেও চলছে দখলরাজ। যে যার মতো ইটের দেওয়াল তুলছে। অস্থায়ী টিনের ঘরগুলির জায়গায় হচ্ছে পাকা ঘর। চৌরঙ্গি মোড়ের দোকানগুলিতেও চলছে দোতলা ভবন তৈরি। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষের বাড়ি লাগোয়া প্রায় দশ থেকে বারো কাঠা জমিতে চলছে মার্কেট ভবন নির্মাণ।
নকশালবাড়ি বিএলএলআরও বিপ্লব হালদার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমরা সবাই এখন ভোটের ডিউটিতে ব্যস্ত। এই সুযোগে সরকারি জমিতে নির্মাণ হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে যেখানে দোতলা ভবন তৈরি হচ্ছে সেখানে সরকারি জমি আছে কি না খতিয়ে দেখতে হবে।’ দার্জিলিং জেলা ভূমি আধিকারিক রামকুমার তামাং বলেন, ‘নকশালবাড়িতে ডিআই ফান্ড জমিতে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরির অভিযোগ মেলেনি। পেলে খোঁজ নিয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’