মালদা: মালদা শহরে ১১ বছর বয়সি নাবালিকাকে নৃশংস খুনের ঘটনায় এবার সামনে এল ‘নরবলি’ তত্ত্ব। এনিয়ে এখনও পুলিশ নিশ্চিতভাবে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে না পারলেও বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না জেলা পুলিশের একাংশ। তবে কোনওভাবেই ভাঙা যাচ্ছে না এই খুনে ধৃত কিশোরীর দাদাকে। দফায় দফায় জেরার পরেও জেলা পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করে চলেছে সে। এখনও হন্যে হয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে এই ঘটনার মূল তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে নতুন অফিসার নিয়োগ করে নতুনভাবে তদন্ত এগোতে চাইছে পুলিশ। বুধবার আম বাজারের ঘটনাস্থলে আলোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীর ধড় ও কাটা মুণ্ডু উদ্ধারের ঘটনায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অবশেষে পুলিশের হাতে এসেছে। ওই রিপোর্টে যৌন নির্যাতনের কোনও উল্লেখ নেই। তবে মৃতের মুখ ও মাথায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী খাবার খাওয়ার চার থেকে ছ’ঘণ্টার মধ্যে ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। কীভাবে গলা কাটা হয়েছে তাও ময়নাতদন্তে খুব একটা স্পষ্ট হয়নি। জেলা পুলিশের একাংশের ধারণা, এক কোপে নাবালিকার গলা কাটা হয়েছে। যা নরবলি হিসাবেই পরিচিত। তবে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের একাংশ যদিও এই তত্ত্ব মানতে নারাজ। তবে অকুস্থলের পরিস্থিতি ও অভিযুক্তের বয়ানের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে। এরই মধ্যে আরও এক দুঃসংবাদ মিলেছে। নাতনির এমন হত্যার ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ঠাকুরদা। বুধবার মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
এদিকে, এখনও পর্যন্ত খুনে ব্যবহত অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। যা এই ঘটনার তদন্তে অন্যতম প্রমাণ। কিন্তু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র ফেলার কথা বলে পুলিশ আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করেই চলেছে ধৃত। বাধ্য হয়ে অস্ত্র উদ্ধারে প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে পুলিশ। ঘটনার দিন শহরের সমস্ত সিসিক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে মনিটরিংয়ের জন্য একাধিক লোক লাগানো হয়েছে বলে খবর।
অন্যদিকে, এদিন সকাল থেকে আম বাজারের ঘটনাস্থলে আলো লাগানোর কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ফরেন্সিক দলের নমুনা সংগ্রহের পরই ক্রাইম সিনে আলোর ব্যবস্থা করা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রশ্ন, তবে কি রাতেই পুরো ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে ভিডিওগ্রাফি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ? নাকি এলাকা সুরক্ষিত করতে এই পদক্ষেপ?
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, ‘ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে। কবে তার রিপোর্ট আসবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে। সেই রিপোর্ট থেকে মৃত্যুর সময় ও কারণ জানা গিয়েছে। আরও কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। বেশ কিছু বিষয় নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন রয়েছে।’