Friday, March 29, 2024
HomeBreaking Newsস্কুল পরিদর্শকের সই জাল করে দুর্নীতি! পলাতক প্রধান শিক্ষক

স্কুল পরিদর্শকের সই জাল করে দুর্নীতি! পলাতক প্রধান শিক্ষক

প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জেরবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর। দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় বহু শিক্ষকের চাকরি যেমন চলে গিয়েছে তেমনই শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ শিক্ষা দপ্তরের একাধিক কর্তার। এমন আবহের মধ্যেই বেনজির আর্থিক দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে এফআইআর দায়ের হল পূর্ব বর্ধমান জেলার এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রায়না ২ ব্লকের চকচন্দন দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই প্রধান শিক্ষকের নাম প্রশান্ত দাস। স্কুল পরিদর্শকের সই জাল করে সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা ও পড়ুয়াদের পোষাক কেনার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করার পশাপাশি ওই প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষা দপ্তর। জেলার মাধবডিহি থানার পুলিশ হন্যে হয়ে খোঁজ চালিয়েও কাঁচড়াপড়ার বাসিন্দা ওই শিক্ষকের নাগাল এখনও পায়নি। তারই মধ্যে ওই শিক্ষক বর্ধমান জজ কোর্টে আগাম জামিনের যে আবেদন করেছিলেন সেটাও খারিজ হয়ে গিয়েছে।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাসের দুর্নীতি ও জালিয়াতির কারণে স্কুলে পঠন পাঠন থেকে শুরু করে পরিকাঠামো গত উন্নয়ন সবই থমকে গিয়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড ডে মিল। এমনকি স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন পর্যন্ত হয় নি বলে অভিযোগ সহ-শিক্ষক ও অভিভাবকদের। এসব অভিযোগের তদন্তে রায়না ৪ চক্রের স্কুল পরিদর্শক (এসআই) সুশান্ত ঘোষ গত ১৭ আগষ্ট স্কুলে গেলে তাকে বিক্ষোভোর মুখে পড়তে হয়। ওইদিনই সব অভিযোগ মেনে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন স্কুল পরিদর্শক। সেই মত কিছুদিন আগে মাধবডিহি থানায় চকচন্দন দুর্গাদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত দাসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন সুশান্ত ঘোষ। তাতে তিনি  প্রতারণা, স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নষ্ট, ব্যাঙ্কের সঙ্গে জালিয়াতি করার অভিযোগ করেন।

এসআই সুশান্ত ঘোষ পুলিশকে জানিয়েছেন, বেশ কয়েকটি চেকে ও স্কুলের গৃহীত সিদ্ধান্তের খাতায় তাঁর সই জাল করা হয়েছে। এছাড়াও চারটি চেকে তাঁর সই জাল করে টাকা তোলা হয়েছে। এমনকি পড়ুয়াদের পোশাকের জন্যে চেকে ১০০০ টাকা’ লেখা  থাকলেও চেকে জালিয়াতি করে একবার ৬১ হাজার টাকা আরেকবার ৭১ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। একই রকম জালিয়াতি অন্য ক্ষেত্রেও ধরা পড়েছে।  ২০২১ সালের ২২ মার্চ সর্বশিক্ষা মিশনের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৬১০ টাকা তোলার জন্যে চেক লেখা হয়েছিল। কিন্তু দু’দিন পর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ৯২,৬১০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। এসব ছাড়াও ২০২০ ও ২০২১ আর্থিক বছরেও সর্বশিক্ষা মিশনের তহবিল নিয়ম মেনে খরচ হয়নি বলে পুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন এসআই। এসআই সুশান্ত ঘোষ জানিয়েছেন, ‘চলতি বছরের ৩ জুলাই থেকে প্রধান শিক্ষক ‘বেপাত্তা’। ই-মেলে তাঁকে তিনবার চিঠি দেওয়া হয়,  হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগেরও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। স্কুলে যোগ দেওয়ার জন্যে প্রধান শিক্ষককে বলা হলেও তিনি তা করেননি। সে জন্যে প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্কুলের একজন শিক্ষককে টিচার-ইন চার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ’ স্কুলের শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র  জানান, পড়ুয়া এবং স্কুলের স্বার্থে প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা নিক। যাতে অচলাবস্থা কাটিয়ে স্কুলটি ফের পূর্বের গরিমা ফিরে পায়।

Sabyasachi Bhattacharya
Sabyasachi Bhattacharyahttps://uttarbangasambad.com/
Sabbyasachi Bhattacharjee Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 23 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular