রাজু সাহা, শামুকতলা: সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিশোরের, বয়স মাত্র ১৭ বছর। এদিকে, কিশোরীর বয়স মাত্র ১৩ বছর, সে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। স্কুলে গিয়েই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সদ্য উচ্চমাধ্যমিক শেষ হতেই প্রেমের টানে ঘর ছাড়ে এই কিশোর-কিশোরী।
প্রথমে এক পরিচিতর বাড়িতে গিয়ে ওঠে তারা। কিন্তু সেখানে না থেকে এরপরেই বক্সা পাহাড়ের লেপচাখা চলে যায় তারা। ছক ছিল বাইরে চলে যাওয়ার। কিন্তু পরিবারের তরফে খবরটি শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায় বিষয়টি জানতে পারেন। আর খবরটি শুনে বিন্দুমাত্র দেরি না করেই ওই যুগলকে খুঁজতে তদন্ত শুরু করেন।
তদন্তে নেমে ছেলেটির মোবাইল ফোন ট্র্যাক করেই তাদের অবস্থান জানতে পারেন তিনি। এরপরেই লেপচাখা থেকে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে পুলিশ। তবে উদ্ধার করে ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ। বরং ভবিষ্যতে যাতে এমন ভুল পদক্ষেপ তারা না করে, তাই তাদেরকে থানায় নিয়ে এসে দীর্ঘক্ষণ তাদের কাউন্সেলিং করেন স্বয়ং ওসি।
কাউন্সেলিংয়ের পর, ওই কিশোর-কিশোরী নিজেদের ভুল স্বীকার করে প্রতিশ্রুতি দেয়, এখন থেকে ঠিকমতো পড়াশোনা করবে এবং বাবা-মায়ের কথা শুনে চলবে। এরপরেই ওই কিশোর-কিশোরীকে তাদের বাবা-মায়ের হতে তুলে দেওয়া হয়।
যদিও ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে পুলিশকর্তা এবং অভিভাবক মহলে।
শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায়ের কথায়, ‘বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে মোবাইল ফোন চলে আসায় তারা এর অপব্যবহার (Misuse) করছে। এতেই এই ঘটনা ঘটছে। আমরা এগুলি রুখতে স্কুলে স্কুলে সচেতনতা শিবির (Awareness Camp) প্রতিনিয়ত আয়োজন করছি। এরপরেও এরকম ধরনের ঘটনা ঘটায় আমরা রীতিমতো চিন্তিত।’
তিনি আশ্বাস দেন, ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে লাগাতার সচেতনতা শিবির করা হবে স্কুলগুলিতে।
এদিকে, এদিন ছেলেমেয়েদের নিজেদের কাছে পেয়ে তাদের বাবা-মায়েরা হাফ ছেড়ে বাঁচেন। তাঁরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টা রীতিমতো উদ্বেগের মধ্যে কেটেছে তাঁদের। শামুকতলা থানার ওসির উদ্যোগে ছেলেমেয়েদের ফিরে পেয়েছেন বলে জানান তারা। এ বিষয়ে পুলিশকে ধন্যবাদ জানান ওই কিশোর-কিশোরীর অভিভাবকরা।