সুভাষ বর্মন, ফালাকাটা: প্রেমের মাসেই ১৪ দিন ধরে ঘরছাড়া মা। নয় বছরের ছেলে ও তিন বছরের কন্যাসন্তানকে রেখে নিখোঁজ ফালাকাটার কালীপুরের এক গৃহবধূ। অন্য কোনও তরুণের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে বলে স্বামীর দাবি। পরকীয়ার জন্যই এমনটা ঘটেছে বলে পরিবারের বাকিদেরও ধারণা। তবে স্বামীর কথায়, এখনও ফিরে এলে সন্তানদের কথা ভেবে স্ত্রীকে ঘরে তুলে নেবেন তিনি। ঘটনার দু’দিন পর তরুণীর শ্বশুরবাড়ির তরফে ফালাকাটা থানায় মিসিং ডায়ারিও করা হয়েছে। ফালাকাটা থানার পুলিশ জানিয়েছে, মিসিং ডায়ারি জমার পর থেকেই ঘটনার তদন্ত চলছে।
পরিবারের দাবি, বছর ছাব্বিশের ওই গৃহবধূ হয়তো নিজে থেকেই বাড়ি ছেড়েছেন। তাই বাড়ি ফেরাটাও তাঁর ইচ্ছের উপরেই অনেকটা নির্ভর করছে। বছর দশেক আগে কালীপুরের বাসিন্দা ওই তরুণের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম কাঁঠালবাড়ির ওই তরুণীর সামাজিক মতে বিয়ে হয়। ওই তরুণ আগে কখনও কেরলে, কখনও ভুটানে শ্রমিকের কাজ করতেন। এখন অবশ্য একটি আটার মিলে কাজ করেন। আর সেই তরুণী বছরখানেক আগে তিন মাসের একটি বেসরকারি ট্রেনিং কোর্স করেছিলেন নার্সিংয়ের। তারপর চার-পাঁচ মাস থেকে ফালাকাটার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন। এই সূত্রে কখনও নাইট ডিউটিও করতেন। আর ওই কর্মসূত্রেই তিনি অন্য কারও সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়তে পারেন বলে পরিবারের দাবি। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি নিখোঁজ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থানায় মিসিং ডায়ারি করেন স্বামী। স্ত্রীর সন্ধান পেতে এখনও তিনি মরিয়া। স্বামীর কথায়, ‘কোনও ছেলের সঙ্গে আমার স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল। মাসখানেক আগে সে বিষয়ে কিছুটা জানতেও পারি। সে প্রসঙ্গ তোলায় অশান্তি হয়। কয়েকদিন স্ত্রী আমার সঙ্গে কথা বলেনি। তবে সেজন্য যে এভাবে সন্তানের মায়া ত্যাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে, তা ভাবতেই পারিনি।’
মা যে কোথাও চলে গিয়েছে তা নয় বছরের ছেলেটিও বুঝতে পেরেছে। কিন্তু তিন বছরের কন্যাটি এখনও তা বুঝে উঠতে পারছে না। এদিন বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ভাই-বোনে খেলছে। মা ফিরে আসবে বলেই দুজনের বিশ্বাস। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া সেই নাবালকের কথায়, ‘সেদিন মা ফালাকাটায় টাকা তোলার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এখনও আসেনি। মা না আসায় বোনের কষ্ট হচ্ছে।’
এই পরিস্থিতিতে কখনও দিদা, কখনও ঠাকুরমা দুজনের দেখভাল করছেন। তবে কাজে যেতে পারছেন না স্বামী। স্ত্রী ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন তিনি।