শালকুমারহাট: আলিপুরদুয়ার বিধানসভা কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথটি জলদাপাড়া বনাঞ্চল সংলগ্ন শালকুমারহাট এলাকায়। তবে প্রান্তিক এই জনপদ রাজনৈতিক দলগুলির কাছে এক সময় খুব বেশি গুরুত্ব পেত না। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসায় আগে কিংবা পরে কখনও দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব শালকুমারহাটের কোনও নেতা পাননি। এবার যেন সেই ট্র্যাডিশন ভাঙল খোদ শাসকদলই। এবারই প্রথম তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেন শালকুমারহাটের বছর বিয়াল্লিশের তুষারকান্তি রায়। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফলাফলের কারণে পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ পদও পান শালকুমারহাট থেকে নির্বাচিত ভোলানাথ রায়। এতে এলাকার নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। শুক্রবার দিনভর উচ্ছ্বাস ছিল তাঁকে ঘিরে। সংবর্ধনাও পেয়েছেন অনেক।
যদিও বিরোধীরা এতে গুরুত্ব দিতে নারাজ। বিজেপির কিষান মোর্চার রাজ্য সম্পাদক শালকুমারহাটের লক্ষ্মীকান্ত সরকারের কথায়, ‘তৃণমূলের এখন শেষের শুরু। তাই শালকুমারহাটের কাউকে ব্লক সভাপতি করল। তবে এতে বিজেপির ভোটব্যাংকের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না।’ সিপিএমের স্থানীয় নেতা অরবিন্দ রায়ের কথায়, ‘শাসকদলের ব্লক সভাপতি বদল নিয়ে আমাদের কিছু যায় আসে না। আগামী লোকসভা ভোট হবে তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে।’
কিন্তু তৃণমূলের শালকুমার-১ ও শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নেতা-কর্মীরা এতে ভীষণ খুশি। কারণ, আগে কখনও সোনাপুর, কখনও সাহেবপোঁতা, কখনও আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন এলাকার নেতারা ব্লক সভাপতি পদে ছিলেন। প্রান্তিক শালকুমারহাটের নেতা-কর্মীরা সবসময় ব্লক সভাপতিকে কাছে পেতেন না। এখন কাছে পাবেন। শালকুমারহাটের মহাকালধাম মন্দিরের পাশেই বাড়ি তুষারকান্তির। তাঁর বাবা স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আগে তৃণমূলের যুব সংগঠন করতেন। এছাড়া ব্লক সভাপতি হওয়ার আগে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। তুষারকান্তির কথায়, ‘দল যে ভরসা করে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে সবার সহযোগিতায় তা যথাযথভাবে পালন করব।’ দলের শালকুমার-২ অঞ্চল সভাপতি মুকুলচন্দ্র বর্মন বললেন, ‘এটা শালকুমারহাটের সাধারণ নেতা-কর্মীদের কাছে বড় পাওনা। এখন সবসময় ব্লক সভাপতিকে কাছে পাওয়া যাবে।’ তৃণমূল কিষান ও খেতমজুর কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি শালকুমারহাটের হরিপ্রসাদ রায়েরও একই বক্তব্য।
তবে, ১১ গ্রাম পঞ্চায়েত বিশিষ্ট আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন। শালকুমারহাট থেকে জেলা শহরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিমি। এই দূরত্ব সাংগঠনিক কাজে বাধা হবে কি না জানতে চাইলে নয়া ব্লক সভাপতি তুষারকান্তির মন্তব্য, ‘দলের সৈনিক হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে এই দূরত্ব নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না।’