উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে দেশ ছেড়েছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। দীর্ঘ চার বছর লন্ডনে ও বিশ্বের একাধিক রাজ্যে কাটিয়ে শনিবার দেশে ফিরলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) সুপ্রিমো। তাঁকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। জেলে যাওয়ার ভয়ে নওয়াজ শরিফ আর সাহস দেখাননি দেশে ফেরার। পরিস্থিতি অনুকূল হতে দেশে ফিরে এসেছেন প্রাক্তন এই পাক প্রধানমন্ত্রী।
অবশেষে জল্পনার অবসান। দীর্ঘ চার বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরলেন কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। এদিন ৭৩ বছর বয়সী পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সুপ্রিমো চার্টার্ড ফ্লাইট “উমিদ-ই-পাকিস্তানে চেপে দুবাই থেকে ইসলামাবাদে এসেছেন। এদিন তাঁর বিমানে সঙ্গী ছিলেন পরিবারের লোকেরা ও দলের কিছু প্রবীণ নেতা। তাঁর নিজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী হন তাঁর ভাই শেহবাজ শরিফ। তিনি প্রায়ই লন্ডন ছুটতেন দাদার সঙ্গে পরামর্শ করতে।
জানা গিয়েছে, ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসাবে তুলে ধরতে চাওছে পিএমএল (এন)। ভাইয়ের সঙ্গে দাদার এমনই বোঝাপড়া হয়েছে। এদিকে পাকিস্তান পিপলস পার্টি ইতিমধ্যে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাবলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে। ফলে নওয়াজ-বিলাবল লড়াই অবশ্যম্ভাবী।অন্যদিকে নওয়াজের প্রধান প্রতিপক্ষ পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খান দুর্নীতির মামলায় জেলবন্দি। তাঁকে কারাগারে রেখে ভোট করিয়ে নিতে পারে পাকিস্তানের বর্তমান অন্তবর্তী সরকার। কারণ, ইমরানের বিরুদ্ধে সেনা আইনে দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু করে রেখেছে সেনাবাহিনী। ফলে ইমরানের পক্ষে কারাগার থেকে বেরিয়ে ভোটে লড়াই করা সম্ভব হবে কি না তা অনিশ্চিত। তাছাড়া, তাঁর ভোটে প্রার্থী হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার পরিণতি নিয়েও ঘোর সংশয় আছে।
ইমরান খানের মতই তোষাখানা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল নওয়াজের বিরুদ্ধেও। কিন্তু নওয়াজকে আপাতত গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ইসলামাবাদের আদালত। পাশাপাশি, আরও অন্তত তিনটি দুর্নীতির মামলায় আদালত জামিন পেয়ে গিয়েছে নওয়াজ। এরপরই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন নওয়াজ শরিফ।
এদিকে নওয়াজ দেশে ফিরছেন এমন খবর চাউর হতেই শুক্রবার বিকেল থেকেই লাহোর চলে যায় নওয়াজের অনুগামীদের দখলে। অথচ কয়েক মাস আগেও লাহোর ছিল ইমরানের অনুগামীদের দখলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৭০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে নওয়াজ শরিফের বাসভবন ইকবাল পার্কে। ফলে এই মুহূর্তে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে থাকা কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা এখন বিশ বাঁও জলে। আর ফের প্রধানমন্ত্রী হতে পারলে আইন করে মামলাগুলি বাতিল করে দেওয়া অসম্ভব নয়। সেটাই পাকিস্তানের শাসকদের বহু ব্যবহৃত কৌশল।