হরিশ্চন্দ্রপুর: কয়েক মাস আগেই হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম হরদমনগর থেকে রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল করেছিলেন দিনমজুরের ছেলে কেশবচন্দ্র দাস। হয়েছেন ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার। আবারও রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক পদের পরীক্ষায় নজরকাড়া ফল করে তাক লাগালেন হরিশ্চন্দ্রপুরের এক হোটেল কর্মচারীর ছেলে রকিচন্দ্র দাস (২৬)। তুলসীহাটা অঞ্চলের রারিয়াল থেকে ডব্লিউবিসিএস-এ তিনি অভাবনীয় ফল করে জয়েন্ট বিডিও-র পদে যোগদান করতে চলেছেন। ছেলের এই সাফল্যে খুশি বাবা, মা ও আত্মীয়স্বজনরা।
গত ২০ জুলাই ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। রকি ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় ‘সি’ বিভাগে রাজ্যে ২৯ র্যাঙ্ক করেছেন। বাবা পরাণচন্দ্র দাস একজন হোটেল কর্মচারী এবং মা অনু দাস একজন অঙ্গনওয়াড়ির সহায়িকা। ছোট থেকেই আর্থিক কষ্ট নিত্যসঙ্গী থাকলেও বাবা-মা তাঁকে কখনও অভাব বুঝতে দেননি। রকি জানান, দু’বার অসফল হওয়ার পর তৃতীয়বার ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় তাঁর সাফল্য এসেছে।
২০১২ সালে তুলসীহাটা উচ্চবিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে মাধ্যমিক ও ২০১৪ সালে লেটার মার্ক নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন রকি। এরপর মুর্শিদাবাদ কৃষ্ণনাথ কলেজে ইংরেজি অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে স্নাতক পাশ করেন। এরপর বহরমপুর মেসে থেকে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতেন। আর্থিক অভাবের কারণে তেমন কোচিং নিতেও পারেননি। মুর্শিদাবাদ জেলাস্তরের প্রশাসনিক কিছু আধিকারিকের সহায়তায় মুর্শিদাবাদ জেলা গ্রন্থাগারে দেড় বছর ধরে অবৈতনিকভাবে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন তিনি। সেই সময় সকাল-বিকেল টিউশন করে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতেন রকি।
রকির বাবা-মা জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকে রকি মেধাবী। দারিদ্রের সঙ্গে লড়ে ছেলেকে মানুষ করেছেন। তাঁদের আশা, প্রশাসনিক পদে থেকে ছেলে যেন মানুষের সেবা করেন।