উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ খড়গপুর শহরের গোলবাজারে গয়নার দোকানে ডাকাতির কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ধরা পড়ল ৫ ডাকাত। বিহারে পালানোর আগেই ডাকাত দলকে ধরে ফেলে পুলিশ। ডাকাতদলকে ধরতে পুলিশ ড্রোনের সাহায্য নেয় বলে খবর। জানা গিয়েছে, ধৃতেরা প্রত্যেকেই বিহারের বৈশালী জেলার বাসিন্দা। রানাঘাট এবং পুরুলিয়ায় ডাকাতির ঘটনায় ধৃতরা যুক্ত কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ১১টা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর শহরের গোলবাজার জনবহুল এলাকায় একটি সোনার দোকানে গয়না কেনার অছিলায় ঢোকে চার ডাকাত। বেশ কয়েকটি সোনার গয়না পছন্দ করে তাঁরা। এরপর দোকান মালিক মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা আশিস দত্ত টাকা পেমেন্ট করার কথা বলতেই এক ডাকাত ব্যাগ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে দোকানের যাবতীয় গয়না ছিনিয়ে নিতে শুরু করে ডাকাত দল। আর ডাকাতিতে বাধা দিলে সোনার দোকানের মালিক আশিস দত্তের বুকে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে আশিসবাবুর পেট এবং বুকের মাঝখানে। তখনই লুটিয়ে পড়েন তিনি। এমনকী ওই সোনার দোকানের এক কর্মচারীকেও হাতে চাকুর কোপ মারে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় দু’জনই মারাত্মক জখম হন। তারপরই দুষ্কৃতীরা দোকান থেকে বেরিয়ে চম্পট দেয়। এই ডাকাতির ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতদলের খোঁজ শুরু করে খড়গপুর থানার পুলিশ। তন্ন তন্ন করে খোঁজ শুরু হয়। কিছু ক্ষণের চেষ্টায় দুষ্কৃতীদের নাগালের মধ্যে পেয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ডাকাত দলটি খড়গপুর শহর থেকে কলকাতা-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে লোধাশুলির দিকে রওনা দিয়েছিল। তাদের পিছু নেয় খড়গপুর টাউন থানার পুলিশ। পুলিশ পিছু নিয়েছে দেখে গোপীবল্লভপুর হয়ে ওডিশার দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই তদন্তকারীরা ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক-সহ বেলিয়াবেড়া থানার রান্টুয়া এলাকায় পৌঁছে যায় বিরাট পুলিশ বাহিনী। তারা সেখানে ব্যারিকেড তৈরি করে। এত পুলিশ দেখে গাড়ি ফেলে পালানোর চেষ্টা করে পাঁচ ডাকাত। তাদের ধাওয়া করে পুলিশ। ডাকাতদল এলাকারই এক ধানখেতে আত্মগোপন করে। শুরু হয় পুলিশি তল্লাশি। খোঁজ না পেয়ে ধানখেতের ওপর ওড়ানো হয় ড্রোন। আর তাতেই ধরা পড়ে যায় ৫ ডাকাত। পরে ধৃতদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে অস্ত্র এবং একটি গাড়ি আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকাত দলের ৫ সদস্যের বাড়ি বিহার রাজ্যে বৈশালী জেলায়। ডাকাত দলের সদস্যদের নাম হল গৌরব সিং, প্রকাশ কুমার, সুজিত কুমার , নবীন কুমার এবং রোশন কুমার।
এদিকে ডাকাত দলকে পাকড়াও করার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের বিশেষ টিমকে ৬০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা।