উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বাংলা থেকে ফিরতেই জোর ধাক্কা খেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর গড়ে উলটপুরাণ। বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতায় গড়া পঞ্চায়েত সমিতি চলে গেল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরি বিধানসভার খেজুরি ২ পঞ্চায়েত সমিতির। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপির দুই জয়ী সদস্য–সদস্যা আনুষ্ঠানিকভাবে শাসকদলে যোগ দিতেই তৃণমূলের দখলে চলে আসে ওই পঞ্চায়েত সমিতি।
শুভেন্দু নন্দীগ্রামের বিধায়ক হলেও, খেজুরি বিধানসভা শুভেন্দু অধিকারীর গড় বলেই পরিচিত জেলায়। আর সেখানেই তাঁর দলের দুই জয়ী সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হয়েছে। বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন দুই সদস্য উদয়শংকর মাইতি ও পিপাসা দাস। এতেই বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি। উদয়শংকর মাইতি খেজুরিতে বিজেপির তিনবারের মণ্ডল সভাপতি ছিলেন। এদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তন্ময় ঘোষ, সভাধিপতি উত্তম বারিক এবং জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি।
তৃণমূলে যোগ দিয়েই উদয়শঙ্কর মাইতি বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতিতে আমার জয়লাভ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটে। বিজেপির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রেষারেষি চলছে। বিজেপির বেশ কিছু নেতা আমাকে হারানোর চক্রান্ত করেছিল। যে গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল জয়লাভ করেছে, সেই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির পঞ্চায়েত সমিতির আসনে আমি বিজেপির প্রার্থী হয়েও জয়লাভ করেছি। তৃণমূলের ভোটেই আমি জিতেছি বলে সেখানে যোগ দিলাম।’
জানা গিয়েছে, খেজুরি–২ পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন সংখ্যা ১৫। যার মধ্যে বিজেপি জয়লাভ করে ৯টি আসন। আর তৃণমূল কংগ্রেস জয়ী হয় ৬টি আসনে। সেখানে বিজেপির থেকে দুটি আসন চলে গেলে তৃণমূলের আসন বেড়ে দাঁড়ায় ৮। আর বিজেপির কমে গিয়ে হয়েছে ৭।
উদয়শংকর মাইতি ও পিপাসা দাসের দলবদলে খেজুরি–২ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপির হাতছাড়া হওয়ায় দলের অন্দরেই উঠেছে নানান প্রশ্ন। তাহলে শুভেন্দু অধিকারীর ক্যারিশমা কোথায়? তাঁর গড়েই কেন আটকাতে পারলেন না? জেলায় ঠিক কী বার্তা যাবে? এখন এসব প্রশ্ন নিয়ে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে বলে জেলা পার্টির অন্দরে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস খেজুরিতে বোমা বন্দুকের রাজনীতি করছে। তাই আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছেন। সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে খেজুরিতে। আমাদের এই দুই সদস্যকে নিশ্চিতভাবে ভয় দেখানো হয়েছে।’