বর্ধমান: অসময়ে হওয়া একটানা বৃষ্টির জলে ডুবে গিয়েছে বীজ বপন করা আলুর জমি। তা দেখে চূড়ান্ত হতাশ হয়ে পড়েছিলেন এই রাজ্যেরই শস্যগোলার ঋণগ্রস্ত আলুচাষি রূপসনাতন ঘোষ(৪৬)। কীভাবে দেনার টাকা শোধ করে ফের আলু চাষ করবেন সেই দুঃশ্চিন্তাই তাঁর পিছু তাড়া করে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু পরিত্রাণের কোনও উপায় না পেয়ে শেষমেষ আত্মহত্যার পথই বেছে নিলেন প্রান্তিক চাষি রূপসনাতন। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থানার পুলিশ তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে শনিবারই কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। চাষির এমন অকাল মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পূর্বস্থলীর উত্তরপাড়া গ্রাম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,পূর্বস্থলী ২ ব্লকের নিমদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত প্রত্যন্ত গ্রাম ছাতনি উত্তরপাড়া। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা রূপসনাতন ঘোষ। তাঁর ভাই অমল ঘোষ বলেন, ‘লাভের আশায় আমার দাদা ঋণ নিয়ে দুই বিঘা জমিতে আলু চাষ শুরু করেছিলেন। বাকি ৩ বিঘা জমিতে তিনি অন্য ফসলের চাষ করেন। কিন্তু একটানা বৃষ্টির জলে ডুবে যায় আলু চাষের জমি। তাতে আলু গাছ নষ্ট হয়ে যায়। চাষের এই ক্ষতি নিয়ে মানসিক চাপ আর সামলাতে না পেরে দাদা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হন।‘
পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘চাষির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।‘ জেলার সিপিএম নেতা বিনোদ ঘোষ বলেন, ‘এমন আশঙ্কা আমরা আগেই করেছিলাম। তাই বৃষ্টি থামতে না থামতেই চাষিদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে সারা ভারত কৃষকসভা জেলার ব্লকে ব্লকে বিডিওর কাছে ডেপুটেশন দিয়েছে।‘ জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘বাংলার কৃষকরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পান না। রাজনৈতিক রং দেখে চাষিদের সরকারি সুবিধা দেওয়া হয়। তার উপর অসময়ের বৃষ্টিতে চাষিদের প্রভূত ক্ষতি হয়ে গেল। এই অবস্থাতেও রাজ্য সরকার যদি দ্রুত চাষিদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা না করে তবে বিজেপি বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।‘