গাজোল: র্যাশন ব্যবস্থা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। একদিকে, ইডি হেপাজতে রয়েছেন এই দপ্তরের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। জেলে রয়েছেন ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। অন্যদিকে, আগামী পাঁচ বছর দেশবাসীকে বিনামূল্যে র্যাশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু র্যাশনের মাধ্যমে যে চাল, আটা দেওয়া হচ্ছে তা কি আদৌ খাওয়ার যোগ্য? বিভিন্ন সময়ে নিম্নমানের সামগ্রী নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ উঠে আসছে। রবিবার আটার গুণমান নিয়ে প্রশ্ন তুলে র্যাশনের আটা নিতে অস্বীকার করেছেন গাজোলের জামতলা সংলগ্ন ভইষপুকুর গ্রামের মানুষেরা। নিম্নমানের আটা না নিয়ে র্যাশন ডিলারকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান ওই গ্রামের মানুষেরা। শেষ পর্যন্ত র্যাশন সামগ্রী বিলি না করে ফিরে আসতে হয় ডিলারকে।
এদিন র্যাশন সামগ্রী বিলি করতে করকচ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভইষপুকুর গ্রামে যান র্যাশন ডিলার দীপক দাস। র্যাশনের চাল, আটা এবং চিনি বিলি করছিলেন তিনি। কিন্তু আটার মান দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকেরা। তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, নিম্নমানের এই আটা তাঁরা গ্রহণ করবেন না। এরপর র্যাশন সামগ্রী না নিয়ে ডিলারকে আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী মঞ্জুর হক জানান, র্যাশনে মাধ্যমে যে আটা দেওয়া হচ্ছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। আটা থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। বাজারে আমরা যে গমের আটা কিনে থাকি তার থেকে এই আটার গুণমান অনেক খারাপ। আটা মুখে দিলে বালুর মতো কিচকিচ করছে। এছাড়াও ওজনে অনেকটা কম রয়েছে আটা। তাই চাল নিলেও স্বাভাবিকভাবে আটা নিতে অস্বীকার করেছি আমরা। মানুষ খেতে পারে এইরকম আটা দিতে হবে।
এফএসএসএআই-এর সার্টিফিকেট মান্যতা প্রাপ্ত এই আটা। তাহলে এখানে প্রশ্ন থেকে যায়, খাদ্যের গুণমান নিয়ে যে সংস্থা সার্টিফিকেট দেয় সেখানেও কি ভেজাল রয়েছে। একে তো নিম্নমানের আটা তার উপর ওজনেও অনেকটা কম। এই সমস্ত মিল থেকে লক্ষ লক্ষ প্যাকেট আটা সরবরাহ করা হয় খাদ্য দপ্তরকে। এক একটি প্যাকেটে যদি পঞ্চাশ গ্রাম করে আটা কম থাকে তাহলে সেখান থেকে কী পরিমাণ মুনাফা করছে মিল মালিকগুলো তা কি সরকার জানে না? তাই একদিকে ওজন কম আর অন্যদিকে নিম্নমানের আটা। এই দুই মিলিয়ে গ্রামবাসীরা র্যাশনের আটা নিতে অস্বীকার করেছেন।
জানা গিয়েছে, নারায়ণপুরের গৌড় ফ্লাওয়ার মিল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে এই আটা। প্যাকেটে যে সিল রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে অক্টোবর মাসে ডেট পার হয়েছে এই আটার। কিন্তু ডেট পার হওয়া সেই আটাই র্যাশন গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে নভেম্বর মাসে। র্যাশন ডিলার দীপক দাসের বক্তব্য, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। কন্ট্রোলারের কাছ থেকে যে সমস্ত আটা এবং চাল দেওয়া হচ্ছে সেগুলোই গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করছি। গ্রাহকেরা নিতে না চাইলে কিছু করার নেই।‘