বর্ধমানঃ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইডি গ্রেপ্তার করেছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। তারপর থেকে এক বছরেরও বেশী সময়কাল ধরে তিনি শ্রীঘরের বাসিন্দা। তবুও এখনও রাজ্যের এক কলেজের অধ্যক্ষের মেয়ে ও জামাইয়ের স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি পাওয়া নিয়ে জড়িয়ে গেল জেলবন্দি পার্থর নাম। পার্থর নাম জড়িয়ে নিয়োগ দুর্নীতির পোস্টারে ছয়লাপ পূর্ব বর্ধমানের মেমারি শহর। স্বাস্থ্য দপ্তরে হওয়া এই নিয়োগ নিয়েও দাবি উঠল সিবিআই তদন্তের। আর এই অজস্র পোস্টার ঘিরেই এখন সরগরম পূর্ব বর্ধমানের মেমারি। এ নিয়ে কটক্ষ করেছে বিরোধীরাও।
বড় সাদা কাগজের উপরে লাল ও কালো কালি দিয়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা পোস্টার পড়েছে মেমারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে শুরু করে প্রাচীর ও আশপাশের ইলেকট্রিক পোল সহ একাধিক জায়গায়। বুধবার সকালে এমন পোস্টারের বিষয়টি স্থানীয় বাসিন্দাদের নজরে আসে। পোস্টার গুলির কোনটিতে লেখা রয়েছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার জন্যে রামপুরহাট কলেজের প্রফেসর থেকে মেমারি কলেজে প্রিন্সিপাল হয়েছেন দেবাশীষ চক্রবর্তী। আবার কোনটিতে লেখা রয়েছে,পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘনিষ্টতার কারণে দেবাশীষ চক্রবর্তীর মেয়ে ও জামাইয়ের স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি হয়েছে। কি ভাবে এই চাকরি হল তার সিবিআই তদন্তের দাবির কথা ওইসব পোস্টারে লেখা রয়েছে। এছাড়াও মেমারি কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশীষ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ’নেতাজি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের’ ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনেও পোস্টার সাঁটিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে। এমনকি দেবাশীষ চক্রবর্তী এবং তাঁর মেয়ে ও জামাইয়ের বিরুদ্ধে প্রচুর সম্পত্তি, রাতারাতি বড়লোক হয়ে যাওয়ার অভিযোগ এনেও এর সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে বেশ কিছু পোস্টারে। মেমারি শহরের বাসিন্দারা এদিন সকালে এমন পোস্টার দেখেই স্তম্ভিত হয়ে যান। পোস্টারে মেমারি কলেজের অধ্যক্ষের নাম থাকায় কলেজের ছাত্রছাত্রী ও স্থানীয় মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।
এই পোস্টার কাণ্ডে নাম না করে কলেজেরই এক অশিক্ষক কর্মীকেই দায়ী করলেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, ‘বারংবারের মতো এটিও ওই অশিক্ষক কর্মীরই কাজ’। তবে পোস্টারে যে যে বিষয় নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করা হয়েছে, সেইসব বিষয়গুলি নিয়ে প্রিন্সিপাল একটিও শব্দ খরচ করেন নি।
জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘কথায় আছে যা রটে তার কিছুটা নাকি বটে। হয়তো এইসব রহস্যও কোন না কোন দিন প্রকাশ্যে আসবে’। এই পোস্টার প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মেমারি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রিয় সামন্তও এদিন একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন মেমারি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন “মেমারি কলেজের প্রিন্সিপাল দেবাশীস চক্রবর্তী অগণতান্ত্রিক লোক। উনি কলেজের মাঠ উৎসবের জন্য দিতে দেড় লাখ টাকা চেয়েছেন। উনি ‘ঘুষ’ চান, টাকা চান, দুর্নীতির সঙ্গে আছেন”। ওঁর অন্যায়ের বিরুদ্ধে যাঁরা সরব হয়েছেন তাদের সুপ্রিয় বাবু ধন্যবাদ জানিয়েছেন।