প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: তৃণমূল কংগ্রেসের ‘দিল্লি ধর্না’ কর্মসূচির অনুমতি দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্ত দিল্লি পুলিশ। বার বার চিঠি দেওয়া সত্ত্বেও এনিয়ে মুখে কুলুপ পুলিশের। এমনই অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের। বৃহস্পতিবার দিল্লির বঙ্গভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক এবং প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ-অবস্থান নিয়ে। এত দিন বাংলার প্রাপ্য টাকা, অধিকার দেওয়া হতো না, এবার দেওয়া হচ্ছে না ধর্নার অনুমতি।’ কুণাল দাবি করেন, তৃণমূলের আন্দোলনে ভীত, সন্ত্রস্ত কেন্দ্রীয় সরকার। তাই এই ধর্নার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। চূড়ান্ত অনৈতিকভাবে তা আটকানোর চেষ্টা চলছে।
১০০ দিনের কাজে রাজ্যের বকেয়া না পাওয়ার প্রতিবাদে ২ অক্টোবর গান্ধি জয়ন্তীর দিনে রাজধানীর বুকে অবস্থান-বিক্ষোভ করার ঘোষণা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মধ্য দিল্লির রামলীলা ময়দানে ধর্নার জন্য পুলিশের কাছে চিঠি দিয়ে প্রাথমিক অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু সেই আর্জি নাকচ করে দিল্লি পুলিশ। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান বুধবার পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনারের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, আগামী ২ এবং ৩ অক্টোবর যন্তর মন্তরের সামনে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাঁরা ধর্নায় বসতে চান। পাশাপাশি দুটি বিকল্প স্থান-দিল্লিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের বাসভবন এবং দিল্লির ‘কৃষি ভবনে’ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সামনে ধর্নার অনুমতি চায় তৃণমূল।
কিন্তু এনিয়ে এখনও কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি দিল্লি পুলিশের তরফে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ইচ্ছা করেই দিল্লি পুলিশ তৃণমূলকে ওই কর্মসূচির অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘আসলে তৃণমূলের ধর্নাকে ভয় পেয়েছে মোদি সরকার। বিজেপিকে যে হারানো সম্ভব তা, বারবার দেখিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা যা করে দেখিয়েছে তা অনুসরণ করেছে হিমাচল ও কর্ণাটকও। ফলে বাংলার আন্দোলন দিল্লির বুকে সাড়া ফেললে সমস্যায় পড়বে বিজেপি। তাই অনুমতি দিতে এই ঢিলেমি’। কুণালের বক্তব্য, ‘এভাবে তৃণমূলকে রোখা যাবে না। আমরা পিছু হটছি না, হটব না।’
এরই পাশাপাশি দিল্লিতে বসে এদিন রাজনৈতিক নীতিপঙ্গুতার অভিযোগ তুলে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে তীব্র তোপ দাগেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে। কিন্তু রাজ্যে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট তৃণমূলের বিরুদ্ধে আঁতাত গড়ে কার্যত বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে।’
কুণালের দাবি, ‘ইন্ডিয়া জোটকে মজবুত করতে যখন মুম্বই সামিটে অংশ নিচ্ছেন মমতা ও অভিষেক, ঠিক তখনই ধূপগুড়িতে একই মঞ্চ থেকে সেলিম এবং অধীর তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হলেন। এই দ্বিচারিতা চলতে পারে না।’