শিলিগুড়ি: ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে শিলিগুড়ির গুরুত্ব অপরিসীম। এবার বাংলাদেশ-নেপাল বাণিজ্যেও বাড়তি গুরুত্ব পেতে চলেছে উত্তরের এই অলিখিত রাজধানী। আর তাকে পাখির চোখ করে শহরকে নতুন করে শিল্প-বাণিজ্য মহলে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরনিগম। চলচ্চিত্র পরিচালক গৌতম ঘোষকে দিয়ে শহরের জন্য ‘পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ তৈরি করার কথা জানান মেয়র গৌতম দেব।
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির একটি হোটেলে বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রস্পেকটাস ফর নর্থবেঙ্গল ইনভেস্টমেন্ট ইন সাস্টেনেবিলিটি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় যোগ দেন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটছে। তাই শিলিগুড়ির পরিকাঠামো উন্নয়নে এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে আমরা ব্যবহার করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই তৈরি হচ্ছে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন।’
উত্তরের অলিখিত রাজধানী হিসেবে তো বটেই, স্বাস্থ্য, শিক্ষার দিক দিয়েও উত্তরবঙ্গের অনেক জেলা শহরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এখানে একশোর বেশি বেসরকারি স্কুল রয়েছে। ৩৫টির মতো চিকিৎসাকেন্দ্র বা হাসপাতাল আছে। পড়াশোনার পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য এখানে নেপাল ও বাংলাদেশের মানুষ আসেন। কিন্তু বেঙ্গল সাফারিতে যেমন ভালো মানের রেস্তোরাঁ নেই, তেমনই গজলডোবায় ভোরের আলো প্রকল্পের মধ্যে দুটির বেশি অভিজাত হোটেল এখনও গড়ে ওঠেনি। পরিকাঠামোগত এধরনের সমস্যা দূর করতে পুরনিগমের এই উদ্যোগ। গৌতম দেব জানান, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি আদর্শ জায়গা। এখানে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক ব্যবসার প্রসার ঘটানোর বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয় কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আনদালিব ইলিয়াসের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘এখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সীমান্ত বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না। বরং প্রতিবেশী রাষ্ট্রে বিনিয়োগ, ব্যবসা করতে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেক শিল্পপতি। সেজন্য ভারতের বস্ত্রশিল্পে বাংলাদেশের শিল্পপতিরা বিনিয়োগ করছেন।’ ভারতের শিল্পপতিদের জন্য চট্টগ্রাম এবং বগুরাতে স্পেশাল ইকনমিক জোন গড়ে তোলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিনের আলোচনা সভায় ছিলেন নেপালের কনসাল জেনারেল এশোর রাজ পোউডেলও। জানালেন, বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে চায় নেপাল। সেক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জায়গার সঙ্গে গুরুত্ব পাবে শিলিগুড়ি। তাঁর কথায়, ‘চিকিৎসা সহ নানান বিষয়ে আমরা শিলিগুড়ির ওপর নির্ভরশীল। এখানকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের ওখানকার ব্যবসায়ীদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।’ বিসিসিআইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জেনারেল অঙ্গনা গুহ রায়চৌধুরী মনে করেন, চা ও পর্যটনের পাশাপাশি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে শিলিগুড়ির আলাদা পরিচিতি রয়েছে। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে। বিসিসিআই শুধু সেতুবন্ধনের কাজ করছে।