মানিকচক: পাকুয়াহাটকাণ্ডে এবার মহিলা কমিশনের তোপের মুখে পড়ল পুলিশ। মঙ্গলবার মানিকচকে দুই নির্যাতিতা মহিলার বাড়িতে যান মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা, বিজেপির বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি সহ বিজেপির একঝাঁক নেতা কর্মী। দুই নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে আলাদা আলাদা করে কথা বলেন রেখা শর্মা। উপস্থিত ছিলেন ডিএসপি আজাহারউদ্দিন খান। কমিশনের চেয়ারপার্সন ডিএসপির কাছেও ঘটনার খুঁটিনাটি জানতে চান। তবে মহিলা কমিশনের প্রশ্নে ওই পুলিশকর্তা জানিয়েছেন ৮ জন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া যাবে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। তবে ওই পুলিশকর্তার বয়ানে একদমই সন্তুষ্ট হয়নি মহিলা কমিশন। এদিন জাতীয় মহিলা কমিশনের পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরি ও বিজেপির নেতাকর্মীরাও পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন। টানা জেরার মুখে খুব একা জুৎসই জবাব দিতে পারেনি পুলিশ। রেখা শর্মা জানান, কোন মামলার ভিত্তিতে ওই দুই মহিলাকে গ্রেপ্তার করে ৬ দিনের জেল হেপাজত দেওয়া হয়েছিল তা জানাতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের ভূমিকা গোটা ঘটনায় অত্যন্ত নক্কারজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিন জাতীয় মহিলা কমিশনের পাশাপাশি এলাকায় পৌঁছে যায় রাজ্য মহিলা কমিশনও। যদিও রাজ্য কমিশনের তদন্তকে কটাক্ষ করেছেন রেখা শর্মা। তিনি জানান, গতকাল হাওড়ার পাঁচলাতেও তাদের পিছুপিছু পৌঁছে গিয়েছিল রাজ্য কমিশন। একই ভাবে এখানেও রাজ্য কমিশনের প্রতিনিধিরা এসেছেন। যদিও রাজ্য কমিশনের তরফে সুজাতা লাহিড়ী জানিয়েছেন, তাঁরা ইতিমধ্যই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করেছেন। তাঁদের উদ্যোগেই দুই নির্যাতিতা মহিলা জামিন পেয়েছেন। জাতীয় কমিশন তাঁদের সঙ্গে কথা বললে গর্ববোধ করতেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাই বামনগোলার পাকুয়াহাট এলাকায় চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় পুলিশ ‘নির্যাতিতা’ দুই মহিলাকেও গ্রেফতার করে। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই চাপে পড়ে যায় পুলিশ। তড়িঘড়ি আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই দুই নির্যাতিতাকে মুক্তি দেওয়া হয়। ঘটনার ৯ দিন পর চার পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ় করে জেলা পুলিশ। আইসি জয়দীপ চক্রবর্তী, নালাগোলা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি মৃণাল সরকার, পাকুয়াহাট পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রাকেশ বিশ্বাস ও এএসআই সঞ্জয় সরকারকে ক্লোজ করা হয়।