নয়াদিল্লি: জুন মাসে ‘পাটনা সামিটে’ অংশ নিয়েছিল ১৫ টি বিরোধী দল। ‘বেঙ্গালুরু সামিটে’ সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ এ। অর্থাৎ মোদী বিরোধী শিবির প্রতিটি অধিবেশনে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ৩১ আগস্ট আসন্ন ‘মুম্বাই সামিটে’ এই সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের সংখ্যা ৩০ পেরোবে কী, সেই নিয়ে আলোচনায় বসেছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। এই সূত্রে উঠে এসেছে এক বিরল সম্ভাবনার তত্ত্ব যেখানে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ শিবির ছেড়ে বেশ কয়েকটি গেরুয়া শিবির ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক দল হাত ধরতে পারে ইন্ডিয়া জোটের, বিশ্বস্ত সূত্রে নয়াদিল্লিতে সোমবার এমনটাই দাবি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বস্তুত: আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ইন্ডিয়া এবং এনডিএ- দুই শিবিরই৷ এই প্রস্তুতি পর্বের অন্যতম অংশ হিসেবে শুধু ‘ঘর গোছানো’ই নয়, বিপক্ষের ‘ঘর ভাঙা’র চেষ্টাও চলছে সমানতালে, এমনটাই দাবি সূত্রের৷ এই মর্মে এনডিএ জোটের থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে আছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’৷ কেন্দ্রের শাসক শিবির ‘এনডিএ’-র সদস্য বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া জোটের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে নিরন্তর৷ অদূর ভবিষ্যতে এই দলগুলি শাসক শিবির ছেড়ে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার সদস্যপদ গ্রহণ করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই, এমনটাই বিরোধী দলীয় সূত্রের দাবি৷
তাত্পর্যপূর্ণ হল, কেন্দ্রের শাসক শিবির এনডিএ জোটের প্রতিনিধি রাজনৈতিক দলগুলির কয়েকটি শিবির পরিবর্তন করতে আগ্রহী এবং তারা কংগ্রেস হাই কমান্ডের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে, ইতিমধ্যেই এই দাবি জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ সুপ্রিমো নীতীশ কুমার৷ তাঁর দাবি, যারা এনডিএ জোট ছেড়ে বিরোধী শিবিরে আসতে চাইছে, তারা সবাই নিয়মিত ভাবে যোগাযোগ রাখছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে এবং কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে৷ এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে মহারাষ্ট্রের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোলে বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে, আগামী দিনে আরও বাড়বে৷ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক দল আছে যারা ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইবে৷ আগামী দিনে আপনারা নিশ্চয়ই জানতে পারবেন কারা কারা এই জোটে যুক্ত হবেন৷’
এই প্রসঙ্গে আসন্ন ৩১ আগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ে নির্ধারিত ইন্ডিয়া জোটের তৃতীয় সামিটের পরে শাসক শিবিরের এই দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ আরও নিবিড় করা হতে পারে বলে ইন্ডিয়া শিবির সূত্রে দাবি জানানো হয়েছে৷ প্রথমে পাটনা পরে বেঙ্গালুরু, পরপর দুটি বৈঠক সফল হওয়ার পরে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সদস্যরা মুম্বাইয়ের বৈঠকের দিকে চোখ রেখে এগোচ্ছে৷ আরব সাগরের পারে আয়োজিত বৈঠকেই শিবিরের ১১ সদস্যের কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করে তার সদস্য নির্বাচন করা হতে পারে৷ এর পাশাপাশি ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় ইন্ডিয়া জোটের ‘লোগো’, সামাজিক মাধ্যমে অস্তিত্বও প্রকাশ করা হতে পারে মুম্বাই থেকেই, দাবি ইন্ডিয়া শিবির সূত্রের৷ এই বৈঠকেই আলোচনা করা হতে পারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যৌথ রাজনৈতিক সভা আয়োজনের বিষয় নিয়েও৷ এসবের মাঝেই সোমবার জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী দাবি করেছেন ২০২৪ লোকসভা ভোটে ইন্ডিয়া শিবিরের তরফে কোনও একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী হিসেবে সামনে নিয়ে আসা হবে না৷ দেশের ১৪০ কোটি জনতাই হবে ইন্ডিয়া জোটের মুখ৷