প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার, ১৮ মার্চ : নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন (New Alipurduar station) চত্বরে পা রাখলেই এখন চোখে পড়বে সাদামাঠা একটা স্টেশন। ঢোকার মুখেই টিকিট কাউন্টার। এরপর বেশ কয়েক সিঁড়ি দিয়ে উঠলে তারপর মূল প্ল্যাটফর্ম। তবে অচিরেই এই দৃশ্যটাই বদলে যাবে। খোলনলচে পালটে যাবে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনের। বৌদ্ধ গুম্ফার আদলে সেজে উঠবে স্টেশন ভবন। দেওয়াল চিত্রে বন ও বন্যপ্রাণের দৃশ্য নজরে আসবে।
পরিবর্তন হবে আরও। এখন যেমন টিকিট কাউন্টার থেকে সিঁড়ি বেয়ে প্ল্যাটফর্মে উঠতে হয়, তা আর করতে হবে না। গোটা স্টেশন চত্বরই উঁচু করা হবে। বাড়তে পারে প্ল্যাটফর্মের সংখ্যাও। আর এসব করা হবে অমৃত ভারত প্রকল্পের অধীনে। সম্প্রতি রেল এই স্টেশনের যে প্রস্তাবিত নকশা সামনে নিয়ে এসেছে, তা থেকেই জানা গিয়েছে এসব কথা।
আলিপুরদুয়ার জেলার কথা বলতে গেলে পর্যটনশিল্পের কথা তো বলতেই হয়। সেই পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই নতুন চেহারার নিউ আলিপুরদুয়ারের (New Alipurduar station) এই মডেলের কথা ভাবা হয়েছে, বক্তব্য রেলকর্তাদের। আধিকারিকরা বলছেন, আগামী পঞ্চাশ বছরের উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে নতুন চেহারার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিমানবন্দরের আদলে যাত্রী বিশ্রামাগার, শৌচালয়, কাফেটেরিয়া, বিভিন্ন দোকান, টিকিট কাউন্টার, অনুসন্ধান অফিস তৈরি করা হবে। স্টেশনের সামনে থাকবে সুসজ্জিত বাগান। চত্বরের অন্যান্য জায়গাতেও বাগান তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্টেশন চত্বর ও সংলগ্ন এলাকায় উন্নত জলনিকাশি ব্যবস্থা থাকবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিভিশনাল সিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মহিপাল বলেন, ‘বিমানবন্দরে যেমন বিশ্রামাগার, শৌচালয় থাকে ঠিক তেমন আধুনিক ব্যবস্থা থাকবে সেই স্টেশনে। এছাড়া বিশেষভাবে সক্ষমদের সুবিধার কথা মাথায় রেখেই সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
প্রায় চল্লিশ ফুট চওড়া ফুটব্রিজ তৈরির কথা রয়েছে। এতে যাত্রীদের যাতায়াতে সুবিধা হবে। ফুটব্রিজের উপরে বিভিন্ন স্টল থাকবে। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইচ্ছুকদের স্টল ভাড়া দেওয়া হবে। তিন ধাপে উন্নয়ন হবে। প্রথম ধাপে স্টেশনের মূল কাঠামোর আমূল পরিবর্তন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তাতে প্রায় ২৪ কোটি টাকা খরচ হবে। পরবর্তী ধাপে পিছনের খোলা অংশে দেওয়াল ও দরজা তৈরি করা হবে। তৃতীয় ধাপে কোন কোন কাজ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
স্টেশনের সামনের জায়গা পরিকল্পিত পার্কিং ব্যবস্থা থাকবে। দুই চাকা, তিন চাকা ও চার চাকার জন্য আলাদা পার্কিংয়ের জায়গা থাকবে। যানবাহন ও যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য নির্দিষ্ট প্রশস্ত রাস্তা থাকবে। প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের দরজা সমান উচ্চতার করা হবে। তাতে যাত্রীদের ট্রেনে চড়া ও নামার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। এমনকি নীচে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও কমবে। বিশেষভাবে সক্ষমদের কথা মাথায় রেখে সিঁড়ি, ফুটব্রিজ ও প্ল্যাটফর্মের মডেল তৈরি হবে।