নকশালবাড়ি ও বাগডোগরা, ১ মার্চ : মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী ১০০ দিনের কাজের (100 Days Work) শ্রমিকরা বকেয়া টাকা পাচ্ছেন। সেই নিয়ে রাজ্যের প্রায় সব জায়গায় গ্রামসভা করছে তৃণমূল। শুক্রবার নকশালবাড়ি ও লোয়ার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে গ্রামসভার আয়োজন করা হয়েছিল। লোয়ার বাগডোগরায় তেমন সমস্যা না হলেও নকশালবাড়িতে ১০০ দিনের কাজের টাকা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকরা। স্থানীয় প্রধান এবং উপপ্রধানকে ঘিরে শতাধিক বাসিন্দা এদিন বিক্ষোভ দেখান। স্থানীয় উপপ্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, পঞ্চায়েতে মোট ১৩৫০ জন জব কার্ড হোল্ডার রয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১৩০০ জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে হাটশেডের নীচে একটি গ্রামসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে জব কার্ড এবং ব্যাংকের খাতা হাতে বিক্ষোভ দেখান মহিলা শ্রমিকরা। অভিযোগ, অনেকেই কাজ করলেও এখনও টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। যেমন, নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কোটিয়াজোতের বাসিন্দা মঞ্জুরানি দত্ত, লক্ষ্মীরানি ভাওয়াল। মঞ্জুরানি বলেন, ‘প্রায় আড়াই বছর আগে ১৪ দিন করে রাস্তায় মাটি কাটার কাজ করেছিলাম। টাকা ঢুকবে বলে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সমস্ত তথ্য সহ নথিপত্র তাদের জমা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকায় বাকি শ্রমিকদের টাকা ঢুকলেও আমাদের মতো কয়েকজনের টাকা ব্যাংকে ঢোকেনি।’
বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা, কাজের সুপারভাইজার মাঝপথে গোলমাল করে জব কার্ডে তাঁদের নামে হাজিরা তোলেননি। অন্যদিকে, রথখোলার মিনা সরকার, নমিতা চক্রবর্তীদের অভিযোগ, আড়াই বছর আগে তিনবারে ৪২ দিন কাজ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে টাকা ঢুকেছে মাত্র চার হাজার টাকা করে। তাঁদের সঙ্গে কাজ করেই অনেকে আট থেকে দশ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জয়ন্তী কিরোর কথায়, ‘অনেক শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তাঁদের ব্যাংক থেকে এখন কেওয়াইসি (KYC) চাইছে। কয়েকজন শ্রমিকের মৃত্যুর শংসাপত্র চাওয়া হয়েছে, সেজন্য টাকা ঢুকতে এত দেরি হচ্ছে।’ এইসবের জন্য পঞ্চায়েতে হেল্পডেস্ক খোলা হয়েছে।’
এদিন লোয়ার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রমিকদের নিয়ে গ্রামসভা করা হয় ধিমালজোত সংসদে। লোয়ার বাগডোগরা গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যনির্বাহী (Executive) প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, রাজ্য সরকার নিজের কোষাগার (Treasury) থেকে উপভোক্তাদের (Consumer) পাওনা মেটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭০০ জনের ৩৭ লাখ টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যে পাঠানো শুরু হয়েছে। এদিন গ্রামসভায় ছিলেন মনোজ চক্রবর্তী, প্রশান্ত দত্ত প্রমুখ।