জলপাইগুড়ি: খরচ বাঁচাতে তাপবিদ্যুতের বদলে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারে জোর দিয়েছে রেল। সেই মতো গ্রিন মিশনকে সামনে রেখে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলস্টেশনগুলিতে বেশি করে সৌরবিদ্যুতের ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির বাইরে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলার স্টেশনগুলিতে সৌরবিদ্যুতের ছাদ বানানোর পরিকল্পনা করেছে। এগুলি তৈরি হয়ে গেলে প্রচলিত তাপবিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ করার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। আপাতত জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার জেলার কয়েকটি বড় স্টেশনে এই ছাদ থেকে ১০০ কিলোওয়াট পিক (কেডব্লিউপি) সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। বেশ কয়েকটি রেল লেভেল ক্রসিংয়েও সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে এ খবর জানা গিয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল একাধিক রেলস্টেশনে গত বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ৬১১০ কেডব্লিউপি ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। ফলে, ওই মাস পর্যন্ত ৪৬ লক্ষ ইউনিট চিরাচরিত তাপবিদ্যুৎ খরচ কমেছে। যার আর্থিক মূল্য তিন কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা। সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে রেলের বিদ্যুৎ বাবদ ওই টাকা সাশ্রয় হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে ২৪টি স্টেশনের রুফটপে সোলার প্যানেল বসিয়ে মোট ৫৫৪ কেডব্লিউপি ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে আরও ১৮৭১ কেডব্লিউপি ইউনিট সোলার রুফটপ তৈরির পরিকল্পনা করেছে রেল। এরমধ্যে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, শিলিগুড়ি মহকুমাজুড়ে কয়েকটি স্টেশনের ছাদ থেকে ১০০ কেডব্লিউপি ইউনিট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। রেলস্টেশনের প্রধান ভবনের ছাদে, প্ল্যাটফর্মের শেডের উপরে বা জায়গা না থাকলে স্টেশনের ফাঁকা জায়গায় সোলার প্যানেল বসানো হবে বলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে জানানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সামনে দিয়ে রেলপথ চলে গিয়েছে। সেই স্টেশনগুলিতেও সৌরবিদ্যুতের প্যানেল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে জঙ্গলের সবুজায়নে কার্বনের ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো সম্ভব বলে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে ডুয়ার্সের কিছু স্টেশনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি বা ডিজেল, কয়লার জ্বালানি পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে চাইছে রেল। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে রেল গ্রিন মিশন সফলে আশাবাদী। এজন্য এখন থেকে তারা চিরাচরিত জ্বালানির বদলে সৌরশক্তিকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে ব্যবহারে জোর দিয়েছে। এই সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে যেমন আলো জ্বলবে তেমনই বাতাসে কার্বন নিষ্ক্রমণও বন্ধ করা যাবে। সার্বিকভাবে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা যাবে বলে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে’র দাবি।