শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পিএসএ (প্রেশার সুইং অ্যাডজর্পশন) অক্সিজেন প্ল্যান্ট। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মেশিন বসানো হলেও তা ফেলে রাখায় স্বাভাবিকভাবেই কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অক্সিজেনের মতো চিকিৎসাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি সামগ্রী তৈরির মেশিন এভাবে ফেলে রাখলে তা বিকল হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবিষয়ে এমএসভিপি ডাঃ রাজীব প্রসাদের বক্তব্য, ‘আমাদের এখানে বড় মাপের এলএমও (লিকুইড মেডিকেল অক্সিজেন) প্ল্যান্ট রয়েছে। সেখান থেকেই অক্সিজেন সরবরাহ হয়। যেহেতু এখানে অক্সিজেনের অভাব নেই তাই রাজ্যের নির্দেশেই পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্টটি বন্ধ করে রাখা হয়েছে।’
এমজেএন মেডিকেলে একসময় শুধুমাত্র সিলিন্ডারের মাধ্যমে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হত। করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় ২০২১ সালের মাঝামাঝি হাসপাতালের পুরোনো একটি ভবনকে সংস্কার করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচে সেখানে পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছিল। মেশিনের সাহায্যে বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে রোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত। একসঙ্গে ছয় হাজার লিটার অক্সিজেনের ধারণ ক্ষমতা ছিল। পরবর্তীতে হাসপাতালের কারমাইকেল ওয়ার্ডের উলটো পাশে ১৩ হাজার লিটারের এলএমও প্ল্যান্ট বসানো হয়। এতদিন দুটি প্ল্যান্ট থেকেই রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করা হত।
হঠাৎ করেই প্রায় দু’মাস আগে রাজ্যের নির্দেশে পুরোনো অক্সিজেন প্ল্যান্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি ঘরের ভিতরে পরিত্যক্ত অবস্থাতেই মেশিনগুলি রয়েছে। পরবর্তীতে অক্সিজেনের বাড়তি প্রয়োজন হলে সেই মেশিনটি চালু করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যেখানে অন্য জায়গায় অক্সিজেন প্ল্যান্টের অভাব রয়েছে সেখানে এমজেএন মেডিকেলে একটি সচল প্ল্যান্টকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে কেন? এখানে প্রয়োজনের তুলনায় অক্সিজেন বেশি থাকলে সেই প্ল্যান্টটির বিকল্প ব্যবস্থা করার দাবিও উঠেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, দীর্ঘদিন প্ল্যান্টটি বন্ধ অবস্থায় থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সেটি সচল রাখার দাবি উঠেছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, অক্সিজেনের বিষয়গুলি দেখার জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার পদমর্যাদার একজন নোডাল অফিসার রয়েছেন। তিনিই বিষয়গুলি দেখছেন।এমজেএন মেডিকেলে পিএসএ বা প্রেশার সুইং অ্যাডজর্পশনের মতো অক্সিজেন প্ল্যান্ট বন্ধ রয়েছে।বিশেষজ্ঞদের মতে, গুরুত্বপূর্ণ এই মেশিন এভাবে দীর্ঘদিন ফেলে রাখলে তা বিকল হয়ে যেতে পারে।করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এই পিএসএ অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছিল। এই মেশিনের সাহায্যে বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে রোগীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত। এখন হাসপাতালে আরও বেশি ধারণক্ষমতার এলএমও প্ল্যান্ট বসানোয় এই মেশিন বাড়তি হয়ে গিয়েছে।