কিশনগঞ্জঃ মিথ্যে মামলায় থানায় আটকে রেখে এক মহিলাকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল থানার আইসির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই পলাতক মূল অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক ও তার এক বন্ধু। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে কিশনগঞ্জ সংলগ্ন নেপাল সীমান্তবর্তী টেরাগছ থানায়। এই ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই অভিযুক্তের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি। পুলিশের অনুমান সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে আত্মগোপন করেছে অভিযুক্তরা। অভিযুক্ত আইসিকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ডাঃ এমানুল হক মেগনু।
জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসের শেষে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের এক মহিলা তাঁর নিখোঁজ স্বামীর খোঁজে আসেন টেরাগছ থানার অধীন ডাকপোখর গ্রামে। সেখানেও স্বামীর খোঁজ না পেয়ে মহিলা মিসিং ডায়েরি করতে যান টেরাগছ থানায়। মহিলাকে একা পেয়ে থানার আইসি নীরজ কুমার নিরালা মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেয়। আইসির সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিথ্যে মামলায় আটক করে মহিলা থানার ব্যারাকে আটকে রেখে টানা আটদিন ধরে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। আইসিকে মদত দেয় স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের এক প্রভাবশালী যুবক মনোজ যাদব। পরবর্তীতে কোনওভাবে বিষয়টি জানতে পেরে স্ত্রীকে পুলিশের হেফাজত থেকে ছাড়াতে টেরাগছ থানায় আসেন তাঁর নিখোঁজ স্বামী। মহিলাকে ছাড়তে অভিযুক্ত আইসি ২ লক্ষ টাকা ঘুষ নেয় বলেও অভিযোগ। সেই সঙ্গে তাদের কুকর্ম যাতে কেউ জানতে পারলে ফের জেলে ঢোকানোর হুমকি দেয় মনোজ যাদব ও নীরজ।
পরবর্তীতে কোনওভাবে পুলিশের এই কুকীর্তির বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। প্রতিবেশীদের চাপে স্বামীকে সঙ্গে করে নির্যাতিতা কিশনগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ডাঃ এমানুল হক মেগনুর শরণাপন্ন হন। এর পরই পালিয়ে যায় ধর্ষণে মূল অভিযুক্ত টেরাগছ থানার আইসি নীরজ কুমার নিরালা ও তার বন্ধু মনোজ যাদব। অভিযোগ দায়ের হতেই অভিযুক্ত আইসিকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত করতে সিট গঠন করা হয়। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান গ্রেপ্তার এড়াতে দুই অভিযুক্ত সীমান্ত পেরিয়ে নেপালে আশ্রয় নিয়েছেন।
কিশনগঞ্জ পুলিশ সুপার ডাঃ এমানুল হক মেগনু জানিয়েছেন, মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে ব্যারাকে আটকে রেখে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তদন্তে গতি আনতে সিট গঠন করা হয়েছে। কোনওভাবেই ছাড় পাবে না অভিযুক্তরা।এদিন কিশনগঞ্জ সদর হাসপাতালে নির্যাতিতার মেডিক্যাল চেকআপ করানো হয়েছে।