রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: জমি দখলের তথ্যপ্রমাণ হাতে পাওয়ার পরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, এই প্রশ্ন তুলে সভাধিপতি থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের সমস্ত পদাধিকারীকে চিঠি দিলেন শিলিগুড়ি (Siliguri) মহকুমা পরিষদের ভূমি ও ভূমি সংস্কার কর্মাধ্যক্ষ কিশোরীমোহন সিংহ। অভিযোগ, খড়িবাড়ি ব্লকের পানিট্যাঙ্কি ও মাটিগাড়ার দাগাপুরের রিসর্টে সরকারি জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণ হয়েছে। মহকুমা পরিষদ থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জমি জরিপ করে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ হাতে এসেছে। তার পরেও সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। এই ঘটনায় ‘সেটিংয়ের তত্ত্ব’ সামনে আসছে। অভিযোগ, উভয় ক্ষেত্রেই সেটিং হয়ে গিয়েছে। তাই সবাই হাত গুটিয়ে নিয়েছে। কিশোরীমোহন চিঠির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘পানিট্যাঙ্কিতে প্রচুর সরকারি জমি দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স হয়েছে। প্রায় ২০০ কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে। একইভাবে দাগাপুরেও সরকারি জমি দখল করে রিসর্ট হয়েছে। জমি মাপজোখ করে দখলের প্রমাণ পেয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দ্রুত যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেই আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।’ সভাধিপতি বলেছেন, ‘আমরাও চাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আশা করছি দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।’
পানিট্যাঙ্কির ভারত-নেপাল সীমান্তে সরকারি জমি দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স হয়েছে। চাপে পড়ে ৭.৯২ একর জমি লিজ নিয়েছিল মেচি মার্কেট ব্যবসায়ী ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। পরে অভিযোগ ওঠে, লিজ নেওয়া জমির বাইরে আরও প্রায় ১৪ বিঘা জমি বেআইনিভাবে জবরদখল করা হয়েছে। মহকুমা পরিষদে নতুন বোর্ড আসার পরে বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে পানিট্যাঙ্কি ও দাগাপুরের রিসর্টের জমি জরিপ করিয়েছিল। সেই জরিপের রিপোর্টে জমি বেআইনিভাবে দখলের প্রমাণও মেলে। অথচ চার মাস কেটে গেলেও প্রশাসন পানিট্যাঙ্কি, দাগাপুরের রিসর্টের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। এ নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের দাবি, এসব জমি জরিপ লোক দেখানো, পুরোটাই সেটিং হয়ে গিয়েছে।
মহকুমা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষের দাবি, ‘মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। জমি দখলের প্রমাণ পেয়েও কেন ব্যবস্থা নিতে পারলাম না সেই প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে। আমরা চাই, অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেজন্যই মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি, দার্জিলিংয়ের জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক, শিলিগুড়ির মহকুমা শাসক, চারটি ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককেও চিঠি দিয়েছি।’