তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গের চা শিল্প তুলে ধরা হবে ডাকটিকিটে (Postage stamp)। চা সংস্কৃতির ইতিহাস জানতে পারবেন আগ্রহীরা। দার্জিলিং (Darjeeling), ডুয়ার্সের (Dooars) পাশাপাশি শ্রীলঙ্কা, আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশের চায়ের ইতিহাসবিজড়িত এই ডাকটিকিট দেখা যাবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সংগ্রহশালার আয়োজিত মেগা মিউজিয়াম প্রদর্শনীতে। ১৪ ও ১৫ মার্চ সংগ্রহশালা প্রাঙ্গণে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৬০ সালে ভারতবর্ষে প্রথম ডাকটিকিট চালু করা হয়। যেখানে একজন মহিলাকে চা পাতা তুলতে দেখা যায়। এর থেকে পরিষ্কার যে ভারতবর্ষে চায়ের গুরুত্ব কতখানি রয়েছে। ১৫ পয়সা দামের সেই ডাকটিকিট ইন্টারনেট বা বইয়ে পড়ছে অনেকেই। কিন্তু তা দেখার সুযোগ হয়নি। সেই সুযোগই এবার এনে দিচ্ছে অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সংগ্রহশালা।
গতবছর ঐতিহাসিক মুদ্রা প্রদর্শনীর আয়োজন করে পড়ুয়া ও গবেষকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছিল সংগ্রহশালা আয়োজিত প্রদর্শনী। তবে এবার শুধু মুদ্রা নয়, পাশাপাশি দেখা যাবে ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন স্ট্যাম্প পেপার, মিনিয়েচার আর্ট, টেরাকোটার শিল্প, প্রাচীন শাস্ত্রীয় বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী ও কীভাবে সেগুলো তৈরি করা হয়েছে সেই কৌশল। মেদিনীপুর থেকে আগত হস্তশিল্পীদের শিল্পকলা তুলে ধরা হবে এই প্রদর্শনীতে। এছাড়াও থাকছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জনজাতির বৈচিত্র্যময় জীবনধারা। অনেকের কাছেই এই জনজাতির ইতিহাস অজানা। যার ফলে তাদের সংস্কৃতির বিস্তার লুপ্ত হতে বসেছে। এবার ধিমাল, রাভা, মেচ, গোর্খা, টোটোদের ইতিহাস, সামাজিক ও সংস্কৃতি তুলে ধরবে সেই জনজাতির মানুষই। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে এই প্রদর্শনীতে যোগদান করবেন তাঁরা। উত্তরবঙ্গ মানেই চায়ের অজানা অনেক কথা। তাই চলতি বছরের প্রদর্শনীর আকর্ষণ যে এই ডাকটিকিট হতে পারে তা বলাই যায়। দার্জিলিং হোক বা ডুয়ার্স সেখানের চায়ের অজানা তথ্য জানতে পারা যাবে এই ডাকটিকিটের মাধ্যমে। চায়ের উপর প্রায় দেড়শো ডাকটিকিট এই প্রদর্শনীতে থাকবে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সংগ্রহশালার তত্ত্বাবধায়ক ডঃ মলয় সাহা বলেন, ‘অনেক কিছুই পড়ুয়ারা বইয়ে পড়ে থাকে। কিন্তু তা চাক্ষুস করার সুযোগ থাকে না। সেই সুযোগই আমরা এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে এনে দেব। এছাড়াও সবথেকে বড় সুযোগ থাকছে যাঁরা গবেষণা করতে চান তাঁদের জন্য। এখানে ঐতিহাসিক বিভিন্ন জিনিস দেখে সেখান থেকে ধারণা পেতে পারবে।’
গতবছর শুধু উত্তরবঙ্গের (North Bengal) মানুষই নয়, বিদেশিদেরও নজর কেড়েছিল এই ঐতিহাসিক মুদ্রা প্রদর্শনী। যেখানে প্রায় ষোলো হাজারের মতো দর্শক প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন। চলতি বছর সেই সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যেই পড়ুয়ারা যাতে এই প্রদর্শনী দেখতে আসে সেজন্য স্কুল ও কলেজগুলোতে নিমন্ত্রণপত্র পাঠানো শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য বিশেষজ্ঞরা হাজির থাকবেন।