পলাশবাড়ি: গত বছর মহাকালপুজোর রাতেই বুনো হাতির হামলায় মৃত্যু হয় বিনোদ মল্লিকের। তবু এবারের পুজোতে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত প্রয়াত বিনোদের ছেলে বিশ্বজিৎ মল্লিক। বুনো হাতির হামলায় যাতে আর কারও মৃত্যু না হয়; ঘরবাড়ি, জমির ফসলের ক্ষতি না হয়- এই প্রার্থনা জানিয়েই বৃহস্পতিবার হাতির মূর্তি ও মহাকালবাবার পুজো করলেন বিনোদের পরিবারের পাশাপাশি যোগেন্দ্রনগরের ব্যাংডাকিপাড়ার বাসিন্দারা। এমনিতে বুনো হাতির পছন্দের খাবার হল কলা গাছ। তাই হাতিপুজোয় এদিন উপচার হিসেবে কলা গাছ দেওয়া হয়। এছাড়াও লোকালয়ে ঢুকে হাতির দল অনেক সময় ধান, চাল সাবাড় করে। এজন্য কলা গাছের পাশাপাশি ধান ও চালও উপচার হিসেবে ছিল।
যোগেন্দ্রনগরের পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণ ওরাওঁয়ের কথায়, ‘গত বছর পুজোর রাতে হাতির হানায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার স্মৃতি এখনও সবার মনে পড়ে। তাই এবার দিনেরবেলাতেই পুজো হয়েছে। তবে এখনও হাতির হামলা চলছে। যদিও গত এক বছরে হাতির হানায় আর কারও মৃত্যু হয়নি। কিন্তু বুনো হাতির প্রতি সবার ভীতি রয়েছেই। তাই পুজো করে এবারও হাতির হানা বন্ধের প্রার্থনাই করা হয়।’ এদিন পুজোর কাজে সকাল থেকেই ব্যস্ত বিশ্বজিৎ, স্ত্রী পুষ্প মল্লিক সহ স্থানীয়রা। বিশ্বজিতের কথায়, ‘বাবাকে তো আর ফিরে পাব না। কিন্তু আর যাতে কারও মৃত্যু না হয় সেই প্রার্থনাই এদিন আমরা করি। এদিন আমি ও মা হাতিপুজোর যাবতীয় কাজের সঙ্গেই যুক্ত ছিলাম।’
পুজো করেন স্থানীয় পুরোহিত অমল চক্রবর্তী। গোটা এলাকায় গত এক বছরে অনেকের বাড়িতেই কমবেশি হাতির হামলা হয়েছে। কারও ঘর ভেঙেছে। কারও জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এমন ঘটনায় অনেকেই মহাকাল ঠাকুরের উদ্দেশ্যে মানত করে থাকেন। তাই যাঁরা মানত করেছিলেন এদিন তাঁরা মহাকালবাবার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। কেউ কেউ পায়রাও ওড়ান।
পুজো কমিটির কর্ণধার চন্দন বর্মন বললেন, ‘প্রায় কুড়ি বছর ধরে জলদাপাড়া বনাঞ্চলের পাশে রাস্তার ধারে হাতির মূর্তি ও মহাকালবাবার পুজো হচ্ছে। কিন্তু গত বারের মতো মর্মান্তিক ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। তাই এবার এক মাস পিছিয়ে তিথি বদলে পুজো করা হল। আমাদের একটাই প্রার্থনা, বুনো হাতির হামলা যেন বন্ধ হয়।’