বর্ধমান: ছাত্রকে শাসন করিছেলেন প্রধান শিক্ষক। তাই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করতে উদ্যত হল ভোকেশনাল কোর্সের পড়ুয়া। তবে বাকি শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে রক্ষা পান প্রধান শিক্ষক। হাওড়ার স্কুলে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল পূর্ব বর্ধমানের সিঙ্গি অঞ্চলের ওকরষা উচ্চ বিদ্যালয়ে। এনিয়ে বৃহস্পতিবার হুলস্থুল পড়ে যায় স্কুলে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়া ও শিক্ষকরা জানান, যে ছাত্রের জন্য এদিন স্কুলে শোরগোল হয় সেই ছাত্র মাধ্যমিক উত্তীর্ণ। ভোকেশনাল কোর্সের জন্য সে ওকরষা উচ্চ স্কুলে ভর্তি হয়েছে। অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই ওই ছাত্র স্মার্টফোন নিয়ে স্কুলে এসে ছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ‘রিল’ তৈরি করছিল। বিষয়টি নিয়ে আপত্তি করে স্কুলের ছাত্রীরা। বুধবার ওই ছাত্র স্কুলের ছাদে গিয়ে ভিডিও রেকর্ড করার জন্য অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীরা আপত্তি জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ছাত্র স্কুলের ছাত্রীদের হুমকি দেয়।
বিষয়টি জানতে পেরে প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত সরকার গতকাল ওই ছাত্রকে বকাবকি করেন। পড়ুয়ার কানমুলে দেন তিনি। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘ছাত্রীদের কাছে অভিযোগ পেয়ে আমি প্রথমে ওই ছাত্রকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তাই গতকাল আমি তাকে বকা দিয়ে কানমুলে দি। সেই কারণে এদিন ওই ছাত্র তার বাবাকে সঙ্গে করে স্কুলে নিয়ে এসে ঝামেলা করে। আমার ওপর চড়াও হয়।’ সহ শিক্ষকরা জানান, এদিন ওই ছাত্র তার বাবাকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে চড়াও হয়। ছাত্রের বাবার হাতে একটি লাঠিও থাকে। তারপর পিতা-পুত্র মিলে স্কুলে প্রধান শিক্ষকের অফিসে ঢুকে যান। দু’জনে প্রধান শিক্ষককে মারতে উদ্যত হন। চিৎকার শুনে অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রধান শিক্ষকের ঘরে ছুটে যান। তাঁরাই প্রধান শিক্ষককে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ স্কুলে পৌঁছায়। তখনই পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই ছাত্র ও তাঁর বাবা পুলিশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসে হাওড়ার একটি স্কুলের ছাত্রকে শাসন করায় স্কুলের টিচার্স রুমে ঢুকে ইংরেজি শিক্ষককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে পড়ুয়ার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কয়েকজন হামলাকারীকে গ্রেপ্তারও করে। এবার পূর্ব বর্ধমানে এমন ঘটনায় ধিক্কার জানিয়েছেন শিক্ষানুরাগী মহল।